আবারও পড়শি পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি অবস্থায় প্রাণ হারাতে হল এক ভারতীয় মৎস্যজীবীকে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৩ জানুয়ারি।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ওই ভারতীয় মৎস্যজীবীর সাজার মেয়াদ আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। এবং তিনি যে ভারতীয় সেটাও পাক প্রশাসনের অজানা ছিল না। তারপরও তাঁকে কারাগার থেকে মুক্ত করা হয়নি। যার জেরে করাচির জেলেই প্রাণ হারাতে হল ওই মফস্যজীবীকে।
প্রয়াত মৎস্যজীবীর নাম বাবু। তাঁর বাবার নাম কানা। সূত্রের দাবি, ২০২২ সালের বাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
সূত্রের আরও দাবি, পাকিস্তানের মাটিতে এমন ঘটনা যে এই প্রথম ঘটল, তা নয়। বস্তুত, গত ২ বছরে এই নিয়ে এমন আটটি ঘটনা ঘটার খবর সামনে এসেছে।
তথ্য বলছে, পাকিস্তানের বিভিন্ন কারাগারে এখনও এমন অন্তত ১৮০ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী বন্দি রয়েছেন, যাঁদের সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, পাক প্রশাসন এখনও তাঁদের মুক্ত করেনি। ফলে তাঁরাও অধীর আগ্রহে দেশে এবং নিজেদের ঘরে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে লাগাতার উদ্বেগ প্রকাশ করে চলেছে ভারত। কিন্তু, পাকিস্তানের তেমন কোনও হেলদোল নেই। যার খেসারত দিতে হচ্ছে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়, 'কনস্যুলার অ্যাক্সেস নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্য়ে যে চুক্তি রয়েছে, যা ২০০৮ সালের ২১ মে স্বাক্ষর করা হয়, সেই অনুসারে - দুই দেশেরই কারাগারে অন্য পক্ষের মোট যত জন মৎস্যজীবী-সহ অন্য নাগরিক বন্দি রয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ও তালিকা প্রতিবছরের ১ জানুয়ারি এবং ১ জুলাই দুই পক্ষের মধ্য়ে আদানপ্রদান করতে হবে।...'
'...২০২৪ সালের ১ জুলাই পাকিস্তানের তরফে সেই তথ্য দিয়ে স্বীকার করা হয়, তাদের হেফাজতে এমন ২১১ জন বন্দি রয়েছেন, যাঁরা নিশ্চিতভাবে ভারতীয় অথবা যাঁরা সম্ভাব্য ভারতীয়। এঁরা সকলেই মৎস্যজীবী। এঁদের মধ্য়ে দমন ও দিউয়ের ২৪ জন মৎস্যজীবীও রয়েছেন। এবং দাদরা ও নগর হাভেলীর কোনও মৎস্যজীবী নেই।'
'দমন ও দিউয়ের ওই ২৪ জন মৎস্যজীবীকে কনস্যুলার অ্যাক্সেস প্রদান করা হয়েছে এবং তাঁরা যে ভারতীয়, তাও ইতিমধ্য়েই প্রমাণিত হয়েছে। পাকিস্তানের সরকার সেই বিষয়ে নিশ্চিত।'
বিদেশ মন্ত্রকের ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, ভারতের তরফে পাকিস্তানের কাছে আবেদন করা হয়, যাতে পাক কারাগারে বন্দি ওই ভারতীয় মৎস্যজীবীদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হয়। সেই তালিকায় দমন ও দিউয়ের ওই ২৪ জন মৎস্যজীবীও রয়েছেন। কারণ, তাঁদের সাজার মেয়াদ ইতিমধ্যেই পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।