ব্রু-পুনর্বাসন বিরোধী বিক্ষোভে মৃত্যু হল তাঁর একজনের। পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে আহত হয়েছিলেন ওই দমকলকর্মী। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। তার ফলে সেই সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই।
শনিবার উত্তর ত্রিপুরা জেলার পানিসাগর মহকুমায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সেই সময় গুলি চালায় পুলিশ। তাতে শ্রীকান্ত দাস নামে একজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়। ১৫ জন পুলিশ এবং দমকলকর্মী-সহ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৩ জন। গুরুতর আহত অবস্থায় বিশ্বজিৎ দেববর্মা-সহ দু'জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে আগরতলার গোবিন্দ বল্লভ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। রবিবার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, সংঘর্ষের ফলে বিশ্বজিতের মাথায় চোট লেগেছিল। তার জেরে ওই দমকলকর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
যৌথ আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক সুশান্ত বিকাশ বড়ুয়া জানান, শনিবার চামঠিলা, পেছারথাল এবং পানিসাগরে 'শান্তিপূর্ণভাবে' রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু আচমকাই বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস গুলি চালায়। তাতে একজনের মৃত্যু হয়।
তবে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। রাজ্য পুলিশের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব সিং দাবি করেছেন, বিক্ষোভকারীরা হিংসাত্মক হয়ে যাওয়ায় আত্মরক্ষার জন্য পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়। তিনি বলেন, 'কোনওরকম অনুমতি ছাড়া সকাল থেকে জাতীয় সড়ক আটকানো হয়েছে। আমরা বোঝানোর চেষ্টা করলেও ওঁরা সরে যেতে চাননি। ওঁরা হিংসাত্মক হয়ে যাওয়ায় আমরা মুদৃ লাঠিচার্জ করি। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যান। তাঁরা অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। আত্মরক্ষায় পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়।'
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে জাতিগত সংঘর্ষের ফলে ব্রু শরণার্থীরা মিজোরাম ছেড়ে পালিয়ে আসেন। তারপর থেকে কাঞ্চনপুর ও পানিসাগর মহকুমার ছ'টি ত্রাণশিবিরে ৩২,০০০-এর বেশি শরণার্থীরা বাস করছেন। তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে চলতি বছর জানুয়ারিতে ত্রিপুরা ও মিজোরাম সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে কেন্দ্র। সেই চুক্তি অনুযায়ী, ত্রিপুরা স্থায়ী বাসস্থান পাবেন তাঁরা। একইসঙ্গে ৬০০ কোটি টাকার প্যাকেজও ঘোষণা করা হয়। সম্প্রতি আবার তফসিলি উপজাতির শংসাপত্রও দাবি করেন ব্রু শরণার্থীরা।