ভারতের কর্ণাটকে সম্প্রতি এক বাংলাদেশি তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় একটি লেকের পাশ থেকে। সেই ঘটনায় এবার প্রতিবাদে সোচ্চার বাংলাদেশি পড়ুয়ারা। রিপোর্ট অনুযায়ী, বেঙ্গালুরুর ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা ২৬ জানুয়ারি বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেছিলেন। সেখানেই ভারত বিরোধী স্লোগান উঠতে শুরু করে। বিচারের দাবিতে আয়োযিত এই সমাবেশে পড়ুয়ারা স্লোগান দেন - ‘দিল্লি না ঢাকা’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’। (আরও পড়ুন: খুলনায় হিন্দু পড়ুয়াকে খুনের ঘটনায় 'ঘনিষ্ঠ বন্ধু' গ্রেফতার, ক্রমে বাড়ছে রহস্য)
এদিকে প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, ধর্ষ-খুনের প্রতিবাদে আয়োযিত এই প্রতিবাদ মিছিলে মোস্তাফিজুর রহমান নামক এক পড়ুয়া অভিযোগ করেন, আওয়ামি লিগের পতনের পর থেকে বাংলাদেশ নিয়ে 'প্রোপাগান্ডা' ছড়াচ্ছে ভারত। এই 'চক্রান্ত' কোনও ভাবে সহ্য করা হবে না বলেও দাবি করা হয়। এদিকে এই মিছিলে আসা মাকসুদুল হক নামক অপর এক পড়ুয়া এমনও অভিযোগ তোলেন যে 'ভারত সবসময় বাংলাদেশে নাক গলায়, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় ভারত'। যদিও এক নারীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদ মিছিলে এই সব দাবি, অভিযোগের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন থাকবে।
উল্লেখ্য, ভারতে বেঙ্গালুরুতে সম্প্রতি উদ্ধার হয় এক নারীর মৃতদেহ। তদন্তে জানা যায়, সেই তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৪ জানুয়ারি কর্ণাটকের রামমূর্তির কালকেরে লেকের কাছ থেকে এক ২৮ বছর বয়সি বাংলাদেশি মহিলার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত চালানোর পর জানিয়েছে, নিহত তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল এবং তারপরে হত্যা করা হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন ওই মহিলা। ২৪ জানুয়ারি সকালে স্থানীয়রা নির্জন এলাকায় তাঁর মৃতদেহ দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতিতা একজন বিবিএমপি (বেঙ্গালুরু পুরসভা) সাফাই কর্মীর স্ত্রী ছিলেন। স্বামী ও তিন সন্তানের সাথে শহরেই থাকতেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা হিন্দুস্তান টাইমসকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, 'নিহত মহিলা বাংলাদেশি নাগরিক। তিনি ছয় বছর ধরে এখানে বসবাস করছিলেন। তাঁর স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেছেন। ২৩ জানুয়ারি ওই মহিলা তাঁর সহকর্মীকে বলেছিলেন যে তাঁর কিছু ব্যক্তিগত কাজ রয়েছে এবং তাই কাজ শেষে বাড়ি ফিরতে দেরি হতে পারে। তাই তরুণীর সহকর্মীকে তাঁকে ছাড়াই চলে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু এরপর অনেক রাত পর্যন্ত তরুণী বাড়ি না ফেরায় সেই রাতেই রামমূর্তি নগর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তাঁর স্বামী।'
এরপর সেই পুলিশ কর্তা আরও বলেন, 'প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সেই তরুণী স্বেচ্ছায় কোনও নির্জন এলাকায় গিয়েছিলেন। সম্ভবত সেখানে পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করতেই গিয়েছিলেন তিনি। শুক্রবার সকালে তাঁর দেহ পাওয়া যায়। দেখা যায়, পাথরের আঘাতে মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন তিনি। বাকবিতণ্ডার জেরে খুন হয়ে থাকতে পারে তাঁকে। আমরা ভাতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৩ (ধর্ষণ) এবং ১০৩ (হত্যা) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছি।'