প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের দীর্ঘ প্রায় ২৪ বছরের শাসনের পতন ঘটিয়ে দামাস্কাসের দখল নিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তেহরির আল-ইসলাম (এইচটিএস)। সেই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে মার্কিন প্রশাসন সরাসরি যোগাযোগ রাখছে। শনিবার সরকারিভাবে সেই তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, মার্কিন সাংবাদিক অস্টিন টাইসকে খুঁজে পেতে দেশের সরকার বদ্ধপরিকর। উল্লেখ্য, ২০১২ সালে সিরিয়ায় গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান ওই সাংবাদিক। তারপর থেকে আর তাঁর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।
জর্ডনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ব্লিঙ্কেন বলেন, 'আমরা এইচটিএস এবং অন্য়ান্য পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমরা অস্টিন টাইসকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাই। তার জন্য আমরা যাদের-যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তাদের সকলের সাহায্য যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা আমরা তাদের বোঝাতে পেরেছি।'
এই প্রসঙ্গে কথা বলার সময়েই মার্কিন সচিব আরও জানান, 'আমরা আমাদের সমর্থন প্রদানের ক্ষেত্রে যে নীতিগুলি মেনে চলি, সেগুলিও সংশ্লিষ্ট পক্ষকে জানানো হয়েছে। সেই নীতিগুলি ওই অঞ্চলে এবং তার বাইরেও গৃহীত হয়েছে। আমরা সেটাও তাদের জানিয়েছি।'
এদিকে, ইতিমধ্যেই শোনা যাচ্ছে, সিরিয়ায় পালাবদলের পরই সেখান থেকে রুশ সেনাবাহিনীর প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ব্লিঙ্কেন বলেন, তিনিও এই খবর শুনেছেন। কিন্তু, সেই শোনা কথার বাইরে তিনি কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না। যদিও তিনি জানিয়েছেন, এই বিষয়ে আরও বিশদে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, আনুষ্ঠানিক কোনও ঘোষণা ছাড়াই মধ্যপ্রাচ্য সফরে বেরিয়েছিলেন ব্লিঙ্কেন। ইতিমধ্যেই তিনি ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ শিয়া আল-সুদানির সঙ্গে বাগদাদে সাক্ষাৎ করেছেন। শুক্রবারের সেই বৈঠকে সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। বাগদাদে পৌঁছানোর আগে তুরস্কেও যান ব্লিঙ্কেন। বৈঠক করেন তুরস্কের বিদেশ মন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে।
আল জাজিরা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, আল-সুদানির সঙ্গে হওয়া বৈঠকে সিরিয়ার পরিবর্তিত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি স্বৈরাচারের অবসানের পর কীভাবে সেদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায়, তা নিয়েও বিস্তারিত কথা হয়েছে দুই পক্ষের মধ্য়ে। সিরিয়ায় যাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কোনওভাবেই অত্যাচারের শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করার উপর বৈঠকে জোর দেওয়া হয়েছে।
জর্ডনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় ইরাকের পরিস্থিতি নিয়েও মন্তব্য করেন ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেন, এই মুহূর্তটি ইরাকের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময় এসে গিয়েছে। এবার ইরাকেও সার্বভৌমত্ব, স্থায়িত্ব ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হওয়া দরকার। যাতে সমগ্র দেশ অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলতে পারে।