বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > Archana Nag case: 'ধর্ষণের শিকার' হয়েছিল, সেই অর্চনাই মেয়েদের ফাঁসিয়ে ছড়িয়েছিল যৌনতার জাল?

Archana Nag case: 'ধর্ষণের শিকার' হয়েছিল, সেই অর্চনাই মেয়েদের ফাঁসিয়ে ছড়িয়েছিল যৌনতার জাল?

অর্চনা নাগ এবং তার স্বামী। (ফাইল ছবি)

Archana Nag case: বাড়িতে না জানিয়েই নয়াদিল্লি চলে গিয়েছিল অর্চনা নাগ। সেখান থেকে মুম্বইয়ে চলে গিয়েছিল। অর্চনা মুম্বইয়ে থাকতে পারে বলে খবর পেয়ে মায়ানগরীতে গিয়েছিলেন সুরেন্দ্রর এবং কয়েকজন গ্রামবাসী।

ছোটোবেলায় কি ধর্ষণের শিকার হয়েছিল অর্চনা নাগ? একটি মহলের তরফে এমনই দাবি করা হচ্ছে। যে ঘটনার পর থেকেই অর্চনার হাবভাব পালটে গিয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে।

কী ঘটনা ঘটেছিল?

কালাহান্ডির লাঞ্জিগঢ় ব্লকের কেন্দুগুডা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিল অর্চনা। ২০০৮ সাল পর্যন্ত সেই গ্রামে ছিল দলিত কৃষক সুরেন্দ্র নাগের বড় মেয়ে। যিনি অ্যালুমিনিয়াম সংশোধনাগারের জন্য নিজের জমি হারিয়েছিলেন। সেই প্রকল্পের বিরোধিতায় নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সুরেন্দ্র। সেইসময় গ্রামের দু'জন অর্চনাকে ধর্ষণ করেছিল বলে অভিযোগ।

ওই প্রকল্পের বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত থাকা লিঙ্গারাজ আজাদ দাবি করেন, সুরেন্দ্র যেহেতু ওই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, তাই 'শাস্তি' হিসেবে অর্চনাকে 'ধর্ষণ' করা হতে পারে। যে ঘটনায় ২০০৮ সালের অক্টোবরে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাজনৈতিক চাপ, টাকার জোরে সেই অভিযোগ ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে জামিনও পেয়ে গিয়েছিল দুই অভিযুক্ত।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সেই ঘটনার পর বাড়িতে না জানিয়েই নয়াদিল্লি চলে গিয়েছিল অর্চনা। সেখান থেকে মুম্বইয়ে চলে গিয়েছিল। অর্চনা মুম্বইয়ে থাকতে পারে বলে খবর পেয়ে মায়ানগরীতে গিয়েছিলেন সুরেন্দ্র এবং কয়েকজন গ্রামবাসী। সেখানে অবশ্য অর্চনার খোঁজ মেলেনি। পরবর্তীতে ফোনে বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল অর্চনা এবং বাড়ি ফিরে আসতে চেয়েছিল।

যে পুলিশ আধিকারিকরা অর্চনাকে জেরা করেছেন, তাঁরা জানিয়েছেন, ইন্টিগ্রেটেড ল'তে ডিগ্রির জন্য ২০১৫ সালে ভুবনেশ্বরে চলে এসেছিল অর্চনা। তবে সেই ডিগ্রি শেষপর্যন্ত পেয়েছিল কিনা, তা নিয়ে ধন্দ আছে। এক পুলিশ অফিসার বলেছেন, 'বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থায় কাজ করেছিল অর্চনা। তারপর বরামুন্ডা এলাকায় একটি বিউটি পার্লার খুলেছিল। সেখানে সেক্স র‍্যাকেট চালাত। সেইসময় জগবন্ধু চাঁদের আলাপ হয়েছিল এবং ২০১৮ সালে তাদের বিয়ে হয়েছিল।'

অর্চনা-কাণ্ডের ইতিবৃত্ত

গত ২২ সেপ্টেম্বর ভুবনেশ্বরের একটি থানায় এক তরুণী অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, সিনেমায় অভিনয় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে যৌন হেনস্থা করেছেন পারিজা। অভিযোগপত্রে তিনি দাবি করেছিলেন, গোপন মুহূর্তের ছবি ও ভিডিয়ো তুলে তাঁর থেকে টাকা নিচ্ছেন পারিজা। দেড় বছর ধরেই যৌন সম্পর্ক চালিয়ে যেতে বাধ্য করেছেন। এমনকী অন্য কাউকে বিয়ে করলে পারিজা তাঁকে খুনেরও হুমকি দিয়েছেন বলে দাবি করেছিলেন ওই তরুণী।

আরও পড়ুন: Archana Nag Sex Racket: ১৮ বিধায়ক, ২ মন্ত্রীকে যৌনতার ফাঁদে ফেলা অর্চনাকে নিয়ে এবার তৈরি হবে সিনেমা

পালটা অভিযোগ দায়ের করেন পারিজা। তিনি অভিযোগ করেন, অর্চনা নামে এক মহিলা নিজেকে আইনজীবী দাবি করেছিল। তাঁকে ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছিল। পারিজা দাবি করেছিলেন, সেই বিষয়টির নিষ্পত্তির জন্য তিন কোটি টাকা দাবি করেছিল। সেই দাবি মেনে না নিলে টুকরো-টুকরো করে কেটে ফেলার হুমকি দিয়েছিল। যে অর্চনাকে ৬ অক্টোবর গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

তারইমধ্যে অর্চনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন শ্রদ্ধাঞ্জলি (যে তরুণী পারিজার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন)। তিনি দাবি করেন, একদিন আগে তাঁকে নিজেদের বাড়িতে পার্টিতে ডেকেছিল অর্চনা। তারপর ঠান্ডা পানীয় এবং খাবার দিয়েছিল। খাবার খেয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছিলেন। ঘুম থেকে উঠে দেখেছিলেন যে তাঁকে বিবস্ত্র করা হয়েছিল। নিজেদের ফোনে সেই ছবি এবং ভিডিয়ো তুলে রেখেছিল অর্চনা ও তার স্বামী। তা ভাইরাল হয়ে করার ভয় দেখিয়ে পারিজাকে ফাঁসাতে বাধ্য করেছিল। পারিজাকেও সংজ্ঞাহীন করে তাঁর ছবি তুলে রাখা হয়েছিল।

আরও পড়ুন: Sex Video ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে বিপুল সম্পত্তি, অর্চনার বাড়িতে ইডির হানা

এমনিতেই যত সময় যাচ্ছে, তত অর্চনার একাধিক সব অভিযোগ সামনে আসছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, প্রথমে তরুণীদের ফাঁসাত অর্চনা। তারপর সেই তরুণীদের ব্ল্যাকমেল করে বড়-বড় নেতা, প্রয়োজকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হত। তাঁদের থেকেও কোটি-কোটি টাকা তোলা তুলত অর্চনা এবং তার জগবন্ধু।আরও রহস্য উদঘাটনের জন্য তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মঙ্গলবারও অক্ষয় পারিজাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছে অর্চনার 'সহযোগী' শ্রদ্ধাঞ্জলি বেহেরাও। 

বন্ধ করুন