পূর্ব লাদাখ সীমান্তে সবকিছু স্বাভাবিক নেই। মেনে সেনাপ্রধান স্বয়ং। মঙ্গলবার সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপোড়েন প্রসঙ্গে বলেন, পূর্ব লাদাখ সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর সবকিছু 'স্থিতিশীল রয়েছে, কিন্তু স্বাভাবিক নেই'!
ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমি কল্যাণ পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত উপদেষ্টাদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত চাণক্য ডিফেন্স ডায়লগ, ২০২৪ -এর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে একথা বলেন সেনাপ্রধান। তাঁর উক্তি, 'পরিস্থিতি সংবেদনশীল'।
সেনাপ্রধান আরও জানান, বর্তমান সম্পর্কের টানাপোড়েনে পারস্পরিক বিশ্বাসটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেটাই 'সবথেকে বড় ক্ষতি'।
সেনাপ্রধান জানান, কূটনৈতিক স্তর থেকে ইতিবাচক বার্তা আসছে। কিন্তু, তার বাস্তবায়ন সেনা আধিকারিকদের পক্ষেই করা সম্ভব। যাঁরা বাস্তবে সেই পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। এবং সেটা দুই তরফের সেনাবাহিনীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
এই প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, 'আমাদের এটা বুঝতে হবে যে কূটনৈতিক স্তর থেকে আপনাদের কাছে নানা মতামত এবং সম্ভাবনা পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু, যখন সেগুলি কাজে করে দেখানোর সময় আসছে, তখন সেটা দুই তরফের সেনা আধিকারিকদেরই করতে হবে। ফলত, এখনকার পরিস্থিতি হল - স্থিতিশীল, কিন্তু স্বাভাবিক নয় এবং সংবেদনশীল।'
উল্লেখ্য, পূর্ব লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চিনের সেনাবাহিনীর মধ্যে যে টানাপোড়েন চলছে, তা প্রায় পাঁচবছর হতে চলল। তথ্য বলছে, শীঘ্রই এই টানাপোড়েন মিটে যাবে, এমনটাও আশা করা যাচ্ছে না। তবে ভারত আশাবাদী, পড়শি রাষ্ট্রের সঙ্গে যে আলাপ-আলোচনা চলছে, তার মধ্যে দিয়েই সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসবে।
এই প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, 'আমরা কী চাইছি? আমরা চাইছি, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের আগে পর্যন্ত পরিস্থিতি ঠিক যেমনটা ছিল, সেই অবস্থা আবার ফিরে আসুক। তা সে ওই এলাকার সাধারণ পরিস্থিতি হোক, কিংবা বাফার জোনের পরিস্থিতি হোক, অথবা টহলদারির বিষয় হোক। এখনও পর্যন্ত আগের পরিস্থিতি ফিরে আসেনি। এূবং আমরা যেকোনও আকস্মিক ঘটনার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছি।'
উল্লেখ্য, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ভারত ও চিনের মধ্যে বহু দফায় আলোচনা হয়েছে।
এ নিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, 'আমরা অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে এসেছি। ইতিমধ্যেই ছোটখাটো কিছু সমস্যার সমাধান হয়েছে। ডেপসাং এবং ডেমচক-সহ নর্দান ফ্রন্টের সমস্ত বিষয় নিয়েই আলোচনা চলছে।'
প্রসঙ্গত, দফায় দফায় আলোচনার পরও ডেপসাং এবং ডেমচক এলাকা নিয়ে মতভেদ এখনও পর্যন্ত কাটেনি। ফলে ভারত ও চিন, দুই পক্ষেরই ১০ হাজার করে সেনা তাদের অত্যাধুনিক বিভিন্ন মারণাস্ত্র নিয়ে লাদাখে মোতায়েন রয়েছে।