ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্য়েই সীমান্তের দীর্ঘ প্রায় ২০০ কিলোমিটার অংশে স্মার্ট ফেন্স লাগানো হয়েছে। এই ব্যবস্থা করা হয়েছে মূলত জম্মুর অন্তর্গত সীমান্ত এলাকায়।
শুক্রবার একথা জানিয়েছেন বিএসএফ-এর জম্মু ফ্রন্টিয়ারের ইন্সপেক্টর জেনারেল ডি কে বরা। তিনি জানিয়েছেন, নয়া এই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভারত-পাক সীমান্তের ওই অংশে প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি চালানো এখন সম্ভবপর হয়েছে। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, জম্মুর অন্তর্গত ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের সর্বত্রই অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম লাগানো হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে বরাকে প্রশ্ন করা হয়, আগামী দিনে কি জম্মুর সীমান্তবর্তী এলাকার সর্বত্রই স্মার্ট ফেন্স লাগানো হবে? জবাবে তিনি জানান, 'ইতিমধ্য়েই জম্মুর অন্তর্গত ভারত-পাক সীমান্তের অধিকাংশ অংশ প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে। আগামী দিনে দেশের অন্যান্য অংশের সীমান্ত এলাকার পাশাপাশি জম্মুতেও এই ব্যবস্থাপনা সম্প্রসারিত করা হবে। খুব শীঘ্রই দেশের সবক'টি সীমান্তেই সেনাদের সশরীরে নজরদারির পাশাপাশি প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি বা টেকনলজিক্যাল সার্ভেল্যান্সও শুরু হয়ে যাবে।'
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে স্মার্ট ফেন্স বসানো সংক্রান্ত দু'টি পাইলট প্রজেক্ট শুরু করিয়েছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। প্রাথমিকভাবে স্থির করা হয়েছিল, জম্মুর অন্তর্গত আন্তর্জাতিক সীমান্তের প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার অংশ স্মার্ট ফেন্স বসানো হবে।
কী এই স্মার্ট ফেন্স সিস্টেম?
এটি আদতে অত্যন্ত আধুনিক একটি নিরাপত্তাবেষ্টনী। যা খালি চোখে দেখা যায় না। এটি সীমান্ত এলাকায় একটি অদৃশ্য বাধা তৈরি করে। যা স্থলভাগের পাশাপাশি জলভাগ এবং আকাশসীমা ও ভূগর্ভ বা মাটির নীচেও সমান কার্যকর হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে ইতিমধ্যেই।
এই ব্যবস্থাপনায় বছরের ৩৬৫ দিন, প্রত্যেক দিনের ২৪টি ঘণ্টা - অর্থাৎ, সর্বক্ষণই পাহারা দেওয়া সম্ভব। এই কাজের জন্য যেসমস্ত উপাদান ব্যবহার করা হয়, সেগুলি হল - থার্মাল ইমেজ, ভূগর্ভস্থ অত্যাধুনিক সেন্সর, ফাইবার অপটিক্যাল সেন্সর, রাডার এবং সোনার প্রযুক্তি। বরা জানান, 'মূলত আন্তর্জাতিক সীমান্তগুলিতে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা গড়ে তুলতেই এই ব্যবস্থাপনা কার্যকর করা হয়েছে।'
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে বিএসএফ-এর তরফ থেকে 'কম্প্রিহেনসিভ ইন্টিগ্রেটেড বর্ডার ম্য়ানেজমেন্ট সিস্টেম' (সিআইবিএমএস) চালু করা হয়। যার অন্যতম অংশ ছিল - এই স্মার্ট ফেন্স ব্যবস্থাপনা।
এর পাশাপাশি বরা আরও জানান, ভারত-পাক সীমান্তে যাতে ড্রোনের সাহায্য়ে কোনও কুকীর্তি না ঘটানো যায়, না নিশ্চিত করতে অ্য়ান্টি-ড্রোন সিস্টেমও লাগানো হয়েছে।