কোম্পানির শেয়ার কেনার সুপারিশ করে ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করে বাজারকে 'বেআইনি ভাবে প্রভাবিত' করার অভিযোগ উঠেছে অভিনেতা আরশাদ ওয়ারসির বিরুদ্ধে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে শেয়ার বাজার থেকে নিষিদ্ধও হয়েছেন তিনি। তবে এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করলেন এই বলিউড তারকরা। এই নিয়ে এক টুইট করে আরশাদ ওয়ারসি লিখলেন, 'আপনি খবরে যা পড়েছেন, অনুগ্রহ করে তা বিশ্বাস করবেন না। স্টক সম্পর্কে মারিয়া (আরশাদের স্ত্রী) এবং আমার জ্ঞান শূন্য। পরামর্শ নিয়ে আমরা শারদায় (খুব সম্ভবত এটা সাধনা ব্রডকাস্ট হবে) বিনিয়োগ করেছিলাম এবং অন্য অনেকের মতোই আমাদের সমস্ত কষ্টার্জিত অর্থ হারিয়েছি আমরা।' (আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে জটিলতা চরমে, এবার কি ডিএ দিতে বাধ্য হবে সরকার?)
প্রসঙ্গত, অভিনেতা আরশাদ ওয়ারসি, তাঁর স্ত্রী মারিয়া গোরেটি এবং সাধনা ব্রডকাস্টের মালিকসহ মোট ৩১টি সংস্থাকে শেয়ার বাজার থেকে নিষিদ্ধ করল সেবি। অভিযোগ, ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে অবৈধ ভাবে শেয়ারের দরকে প্রভাবিত করত। এই আবহে ইউটিউব চ্যানেলগুলির ৫৪ কোটি টাকার মুনাফাকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে সেই টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে সেবি। সেবি উল্লেখ করেছে 'মুন্নাভাই' খ্যাত অভিনেতা নিজেই এর মাধ্যমে প্রায় ২৯.৪৩ লক্ষ টাকার মুনাফা করেছিলেন। তাঁর স্ত্রী ৩৭.৫৬ লক্ষ টাকা মুনাফা করেছেন। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়ার কাছে এই জাতীয় প্রচারের বিষয়ে বেশ কয়েকটি অভিযোগ আসে। তারপর তদন্তের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করতে উক্ত সংস্থা সম্পর্কে মিথ্যা কনটেন্ট বানিয়ে বিভ্রান্তিকর ভিডিয়ো ইউটিউবে আপলোড করা হয়েছিল। অভিযোগ পাওয়ার পর গত বছর সেবির আধিকারিকরা এই বিষয়ে তদন্ত করেন। আর তাতে দেখা যায়, ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে সাধনা ব্রডকাস্টের শেয়ারের দাম এবং চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছিল। এদিকে, এই ২০২২ সালের জুলাই মাসেই সাধনা সম্পর্কে মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর ভিডিয়ো আপলোড করা হয়েছিল ইউটিউবে। দুই ইউটিউব চ্যানেলের নাম 'দ্য অ্যাডভাইজার' এবং 'মানিওয়াইজ'। এই ইউটিউব ভিডিয়োয় সাধনার স্টক কেনার সুপারিশ করা হয়।
ইউটিউব চ্যানেলে দাবি করা হয়েছিল যে, সাধনা ব্রডকাস্ট লিমিটেড আদানি গ্রুপের দখলে চলে যাচ্ছে। এমনও ভুয়ো দাবি করা হয় যে, তারা টিভি প্রোডাকশন থেকে মুভি প্রোডাকশনে চলে যাচ্ছে। বড় আমেরিকান সংস্থার সঙ্গে চারটি সিনেমা তৈরি করার জন্য ১,১০০ কোটি টাকার চুক্তি করেছে। ভিডিয়োগুলি প্রকাশের পরেই, সাধনার দাম বেড়ে যায়। ভিডিয়ো দেখে প্রভাবিত হয়ে অনেক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী এই শেয়ারে টাকা ঢালেন। একসঙ্গে অনেকে শেয়ার কিনতে থাকায় সাধানার দাম বেড়ে যায়। আর ঠিক সেই সময়েই সংস্থার বড়কর্তা, শেয়ারহোল্ডার, সাধনার উচ্চপদের কর্মী এবং ঘনিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডাররা তাঁদের ভাগের শেয়ার হু-হু করে চড়া দামে বেচে দেন। এই আবহে সেবি এবার পদক্ষেপ করল।