সদ্য আবগারি মামলায় অন্তর্বতীকালীন জামিন পেয়ে জেলের বাইরে রয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দলের হয়ে লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করেছেন জোর কদমে। শনিবার সাংবাদিকদের কাছে দিল্লি মুখ্যমন্ত্রী দাবি করলেন, তৃতীয়বার মোদী ক্ষমতায় এলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেলে পুরবেন। শুধু তাই নয়, বেছে বেছে বিরোধী দলের জনপ্রিয় সব নেতাকে জেলে পুরে দেওয়া হবে।
অন্তর্বতীকালীন জামিন পাওয়ার পর অরবিন্দ কেজরিওয়াল শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘এবার জিতে ফিরলেই বিরোধী শিবিরের সমস্ত নেতাদের তিনি (মোদী) জেলে ভরবেন। আবার নিজের দলের নেতাদেরও মুছে ফেলবেন।’
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মণীশ সিসৌদিয়া, সঞ্জয় সিং, সত্যেন্দ্র জৈনকে জেলে পুরেছেন, হেমন্ত সোরেনকে জেলে পুরেছেন, মমতাদিদির মন্ত্রীদের জেলে পুরেছেন, এমকে স্ট্যালিনের মন্ত্রীদেরও জেলে পুরেছেন। এখন কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর পিছনে পড়ছেন।’ তাঁর দাবি, ‘এবার যদি নির্বাচনে জেতেন (মোদী) আমি লিখে দিচ্ছি আগামী দিনে মমতাদি জেলে থাকবেন, তেজস্বী যাদব, এমকে স্ট্যালিন, পিনারাই বিজয়ন, উদ্ধব ঠাকরে জেলে থাকবেন।’
আরও পড়ুন। রাষ্ট্রপতি মুর্মুর দর্শনের পর রামমন্দিরের শুদ্ধিকরণ করতে চাইছে কংগ্রেস-তোপ মোদীর
তাঁর এই মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘জামিনে মুক্তি পাওয়া কেজরিওয়াল বলেছেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে মমতাও জেলে যাবেন। ওঁর মুখে ফুল-চন্দন পড়ুক। গোটা বাংলা তা-ই চাইছে। পিসি জেলে যাক, ঠগী পিসি জেলে যাক।’
কেজরিওয়ালের মন্তব্যের সঙ্গে একমত হয়েও সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হেমন্ত সোরেনকে এক পাতে রাখতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘বিরোধী নেতাদের জেলে পাঠানোর উত্তরাধিকার অর্জন করে ফেলেছেন মোদি। নরেন্দ্র মোদি প্রতিহিংসা পরায়ণ, কেজরিওয়ালের এই মন্তব্যের সঙ্গে আমি একমত। কিন্তু মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের প্রতি যদি দুর্বলতা দেখান কেজরিওয়াল, মমতার জেল যাওয়াকে যদি সোরেনের জেল যাওয়ার তুলনা করেন, আমায় মাফ করবেন। মমতা আর সোরেনকে এক তালিকাভুক্ত করবেন না। ’
আরও পড়ুন। মোদীই PM থাকবেন, পার্টিতে কোনও বিভ্রান্তি নেই’, কেজরিকে পাল্টা জবাব শাহের
তবে কুণাল ঘোষ কেজরিওয়ালকে সমর্থন করে বলেন, ‘বিজেপি-র তরফে বিরোধীদের বিরুদ্ধে যে চক্রান্ত হচ্ছে, তার মুখোশ খুলে দিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কিন্তু আমরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি, যত চক্রান্তই করুক বিজেপি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেশাগ্র স্পর্শের ক্ষমতা নেই বিজেপি বা তৃণমূলেরর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী কেউ।’
ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা দেওয়া উচিত হয়নি বলে এদিন মন্তব্য করেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীকে জেলে পুরে সরকার ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত করছে বিজেপির। সেই কারণেই আমি ইস্তফা দিইনি। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের ইস্তফা দেওয়া উচিত হয়নি। বিজেপি যে রাজ্যে পরাস্ত হবে সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেই জেলে ঢুকিয়ে সরকার ফেলার চক্রান্ত করবে।’
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী মতে পার পাবেনা বিজেপির নেতারাও। তিনি বলেন, ‘লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর যোশী, শিবরাজ সিংহ চৌহান, বসুন্ধরা রাজে, এমএল খট্টর, রমন সিংহদের রাজনীতি শেষ করা হয়েছে। ওদের পরবর্তী লক্ষ্য যোগী আদিত্যনাথ। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকেও ছাড়বে না।’