পুলওয়ামায় সিআরপিএফ জওয়ানদের ওপর জঙ্গি হামলা নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। এই আবহে গোটা দেশে আলোড়ন ছড়িয়েছে। আর এরই মাঝে আগামী ২৮ এপ্রিল সিবিআই তাঁকে তলব করেছে বিমা দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলার প্রেক্ষিতে। এই আবহে এবার সত্যপাল মালিকের পাষে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির জাতীয় আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি সত্যপাল মালিককে 'সাহাসী' আখ্যা দিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে তোপ দেগেছেন। কেজরির কথায়, 'এই ভয়ের সময় জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সাহসিকতা দেখিয়েছেন।'
এক টুইট বার্তায় কেজরিওয়াল এই বিষয়ে লেখেন, 'সারা দেশ আপনার সাথে আছে। এই ভয়ের সময়ে আপনি অনেক সাহস দেখিয়েছেন স্যার। সে কাপুরুষ, সিবিআই-এর আড়ালে লুকিয়ে আছে। এই মহান দেশে যখনই কোনও সংকট পড়েছে, আপনার মতো মানুষ সাহসিকতার সঙ্গে তা মোকাবিলা করেছেন। তিনি নিরক্ষর, দুর্নীতিবাজ ও বিশ্বাসঘাতক। তিনি আপনার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। আপনি এগিয়ে যান স্যার। আপনার জন্য গর্বিত।' এর আগে এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সত্যপাল মালিক দাবি করেছিলেন, সুরক্ষাজনিত ফাঁক ফোকরের জেরে পুলওয়ামা হামলা হয়েছিল। তিনি দাবি করেছিলেন যে সিআরপিএফ জওয়ানদের জন্য বায়ুযানের আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেটা সরকার মানতে চায়নি। আর তার জেরেই জওয়ানদের সড়কপথে যেতে হয়েছিল এবং জঙ্গি হামলার মুখে পড়তে হয়েছিল। সত্যপাল মালিক আরও অভিযোগ করেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নাকি তাঁকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের গাফিলতি প্রসঙ্গে মুখ খুলতে বারণ করেছিলেন। এদিকে সত্যপাল মালিক নিজের এই সব দাবির পক্ষে কোনও তথ্যপ্রমাণ পেশ করতে পারেননি।
এদিকে সিবিআই-এর তলব প্রসঙ্গে সত্যপাল মালিক বলেন, 'আমি রাজ্যপাল থাকাকালীন একটি বিমা স্কিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলাম। সেই স্কিম সংক্রান্ত তথ্য জানতেই এই তলব। সেই স্কিমের সঙ্গে অনেক টাকাপয়সার যোগ ছিল। তাই সিবিআই তদন্ত করছে। এর জন্যই আমার থেকে কিছু তথ্য চায় সিবিআই। আমি রাজস্থান যাচ্ছি। তাই আমি তাদের জানিয়েছিল ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে আমি তাদের সঙ্গে দেখা করতে পারব।' সত্যপাল মালিক এও দাবি করেন, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে দেওয়া সাক্ষাৎকারের প্রেক্ষিতে সিবিআই তাঁকে তলব করেনি। যদিও কেন্দ্রকে তোপ দাগতেও ছাড়েননি তিনি। তিনি বলেন, 'আমার মনে হয় না আমার দেওয়া সাক্ষাৎকারের জন্য সিবিআই আমাকে তলব করেছে। তবে এটাও সত্যি যে কেন্দ্রীয় সরকার সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করছে। তবে আমি কাউকে ভয় পাই না।' উল্লেখ্য, কিরু জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সরকারি কর্মীদের গ্রুপ ইনস্যুরেন্সে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যপাল। সেই সংক্রান্ত মামলায় রিলায়েন্স জেনারেল ইন্স্যুরেন্স এবং ট্রিনিটি রি-ইনস্যুরেন্সের বিরুদ্ধে দু'টি এফআইআর দায়ের করেছে সিবিআই।