ভোটের ফল প্রকাশের পর রবিবারই আত্মসমর্পণ করে জেলে যান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে যে অন্তরবর্তীকালীন জামিন দিয়েছিল, তার মেয়াদ ফুরিয়ে এসেছিল বলেই কারাগারে ফিরলেন আপ সুপ্রিমো। তবে এরই মাঝে আবার দিল্লির আদালতে অসুস্থতার কারণে জামিনের আবেদন করেছিলেন কেজরিওয়াল। তবে জামিনে মুক্ত পাওয়া কেজরিওয়াল যেভাবে দলের হয়ে প্রচারে ঝাঁপিয়েছিলেন, সেটাই বিপাকে ফেলল তাঁকে। আদালত জানিয়ে দিল, যেভাবে কেজরিওয়াল দলের হয়ে প্রচার করেছেন, তা থেকেই প্রমাণিত যে তিনি গুরুতর অসুস্থ নন। তাই তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয় আদালতে। (আরও পড়ুন: ছেলের হাতের মোয়া নাকি? আদালতের কড়া শর্তে চিন্তায় কর্মরত সরকারি কর্মীরা?)
আরও পড়ুন: 'অতি লোভে তাঁতি নষ্ট', বড় রায় আদালতের, মাথায় হাত পড়তে পারে সরকারি কর্মীদের
এদিকে দিল্লিতে তীব্র গরম। এই আবহে কেজরিওয়ালকে তাঁর সেলে কুলার দেওয়া হয়নি বলে এর আগে অভিযোগ করেছিল আপ। এদিকে আম আদমি পার্টির অভিযোগ ছিল, গ্রেফতারির পর কেজরিওয়ালের ওজন ৭ কেজি কমেছে। যদিও তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ তা মানতে নারাজ। জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কেজরিওয়ালের ওজন ৬৩.৫ কেজি। ওঁর রক্তচাপ, সুগার সবই স্বাভাবিক রয়েছে। এর আগে সুপ্রিম নির্দেশে ২১ দিনের জামিন পান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তা শেষ হতেই রবিবার কেজরিকে ফিরতে হয়েছে তিহাড়ে। (আরও পড়ুন: ৯৯ হলেও এখনও সেঞ্চুরি করতে পারে কংগ্রেস! জোটসঙ্গীদের হাত পুড়িয়েই বদল অঙ্কে?)
আরও পড়ুন: ইন্দিরার হত্যাকারীর ছেলে, জেলবন্দি খলিস্তানির জয় ভোটে, কোন পথে পঞ্জাবের রাজনীতি?
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে কেজরিওয়ালের দিল্লি সরকার মদ বিক্রির নয়া নীতি কার্যকর করেছিল। তবে কয়েকদিন পরই সেই নীতি বাতিল করা হয়েছিল। এরই মাঝে অভিযোগ ওঠে, সেই নীতির অধীনে নির্দিষ্ট কিছু মদ ব্যবায়ীর থেকে ঘুষ নিয়ে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল। মদ বেচার লাইসেন্সের জন্য ডিলাররা ১০০ কোটি টাকার ঘুষ দিয়েছিল আম আদমি পার্টিকে। এদিকে এই গোটা ঘটনায় তেলঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মেয়ে কে কবিতার সরাসরি যোগ ছিল বলে দাবি। ইডি অভিযোগ করেছে, কবিতার মদতে দক্ষিণ ভারতে অনেক সংস্থা আপ-কে ঘুষ দিয়ে দিল্লিতে মদ বিক্রির লাইসেন্স পেয়েছিল। আর এই গোটা লেনদেনের নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বর্তমান রাজসাক্ষী রেড্ডি।
আরও পড়ুন: 'থার্ড টাইম লাকি' অ্যাটলাস ৫, ফের মহাকাশে সুনীতা, তবে লঞ্চের পরই রকেটে সমস্যা
এই আবহে দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় আম আদমি পার্টিকে 'কোম্পানি' আখ্যা দিয়েছিল ইডি। শুধু তাই নয়, দাবি করা হয়েছিল, এই গোটা দুর্নীতির মাথা নাকি অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিজেই। এদিকে এই মামলায় এখন রাজসাক্ষী হয়েছেন এক অভিযুক্ত ব্যবসায়ী নিজেই। জানা গিয়েছে, আবগারি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত পি শরৎচন্দ্র রেড্ডিকে এই মামলায় কেজরির বিরুদ্ধে সাক্ষী করেছে ইডি। উল্লেখ্য, এর আগে আবগারি দুর্নীতি মামলায় রেড্ডিকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। পরে জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন তিনি। এদিকে রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, রেড্ডি অরবিন্দ ফার্মা নামক ওষুধ সংস্থার ডিরেক্টর। রেড্ডির গ্রেফতারির পর সেই সংস্থাই পাঁচ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছিল। এসবিআই-এর ইউনিক নম্বর প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, সেই বন্ড নাকি বিজেপির খাতাতে জমা পড়েছিল। পরে এই রেড্ডি জামিনের আবেদন করলে ইডি তার বিরোধিতা করেনি বলে দাবি। আরও দাবি করা হচ্ছে, রেড্ডি জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর আরও ২৫ কোটি টাকার বন্ড কিনেছিল অরবিন্দ ফার্মা। সেই টাকাও গিয়েছিল বিজেপির পকেটেই।