২০২৪ সালে কেন্দ্রীয় সরকার যে ওয়াকফ বিল এনেছে, তা যদি সেভাবেই আইনে পরিণত করা হয়, তাহলে ভারতীয় সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে! এই দাবি তুলে কেন্দ্রীয় সরকারকে ফের একবার সচেতন ও সতর্ক করলেন এআইএমআইএম নেতা তথা সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি।
লোকসভায় ওয়াকফ বিল নিয়ে বক্তব্য পেশ করার সময় তিনি বলেন, 'আমি এই সরকারকে সতর্ক এবং সাবধান করছি - যদি বর্তমান বিল অনুসারে একটি ওয়াকফ আইন প্রণয়ন করা হয়, তাহলে তা সংবিধানের ২৫, ২৬ এবং ১৪ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করবে। এবং তার ফলে দেশে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হবে।'
নিজের বক্তব্য পেশের সময় ওয়েইসি মনে করিয়ে দেন, তিনি একজন গর্বিত ভারতীয় মুসলমান। তিনিও চান বিকশিত ভারত নির্মাণ করা হোক। কিন্তু, তার জন্য যদি ওয়াকফ সম্পত্তি ছিনিয়ে নেওয়া হয়, তাহলে ভারতীয় মুসলমান সমাজ তা কিছুতেই মেনে নেবে না।
ওয়েইসির কথায়, এই বিলটিকে 'সমগ্র মুসলমান সমাজ প্রত্যাখ্যান করেছে। কোনও ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষা পাবে না, কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। আপনারা ইন্ডিয়াকে বিকশিত ভারত হিসাবে গড়ে তুলতে চান। আমরাও বিকশিত ভারত চাই। কিন্তু, আপনারা যদি দেশকে ৮০, ৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে টেনে নিয়ে যেতে চান, তাহলে সেই দায় আপনাদেরই নিতে হবে।...'
'কারণ, একজন গর্বিত ভারতীয় মুসলমান হিসাবে, আমি আমার মসজিদের এক ইঞ্চি জমিও হারাতে পারব না। আমি আমার দরগার এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে পারব না। আমি এটা কিছুতেই হতে দিতে পারি না।'
ওয়েইসির বার্তা এখানে খুব স্পষ্ট। তিনি সংসদে দাঁড়িয়ে বুঝিয়ে দেন, ওয়াকফ সম্পত্তির সঙ্গে মুসলমান সমাজের ধর্মীয় আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। তাই, একজন ভারতীয় মুসলমান হিসাবে তাঁর পক্ষে এই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনা করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, 'আমরা আর এখানে এসে কোনও কূটনৈতিক আলোচনা করব না। এই হল সেই সদন, যেখানে দাঁড়িয়ে আমাকে সততার সঙ্গে কথা বলতেই হবে। আমার সম্প্রদায় - আমরা গর্বিত ভারতীয়। এটি (ওয়াকফ) আমার (মুসলিম সমাজের) সম্পত্তি। কেউ আমাকে এই সম্পত্তি দেয়নি। আপনি এটি আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবেন না। ওয়াকফ আমার কাছে উপাসনার একটি রূপ।'
প্রসঙ্গত, ওয়াকফ বিলের সংশোধনী নিয়ে ইতিমধ্যেই লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার কাছে চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করেছে সংশ্লিষ্ট জেপিসি। যদিও, তারপরও গোটা বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক চলছে। ওয়েইসির মন্তব্য সেই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।