ভারতীয় ভূখণ্ডে চলে এসেছে চিনা বুলডোজার। এমনই দাবি করলেন এআইএএমের প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েইসি। তাঁর আশঙ্কা, যে কোনও দিন চিনের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধ হতে পারে।
সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) দেখিয়ে দাবি করা হয়, অরুণাচল প্রদেশের চাংগাগামের হাদিগারা-ডেল্টা ৬-র কাছে নির্মাণকাজ চালাচ্ছে চিনা বাহিনী। সেই ভিডিয়োর রেশ ধরে শনিবার টুইটারে হায়দরাবাদের সাংসদ তথা এআইএএমের প্রধান বলেন, 'অরুণাচল প্রদেশে আমাদের ভূখণ্ডে চিনের নির্মাণকারী দল কী করছে, সেটা নিয়ে কি আমাদের প্রধানমন্ত্রী (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী) সাহেব কিছু বলবেন?'
সেইসঙ্গে কেন্দ্রের এবং উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারকে তোপ দাগেন। এআইএএমের প্রধান বলেন, ‘আমাদের ভূখণ্ডে চলে এসেছে চিনা বুলডোজার এবং আপনারা (বিজেপি) সেই বিষয় নিয়ে মুখে কুলুপ আটকে রেখেছে। এই লোকগুলি বুলডোজার নিয়ে গর্ববোধ করেন। ওখানে গিয়ে বুলডোজার নিয়ে আসুন। চিনের সঙ্গে ১৪-১৫ বার আলোচনায় বসেছে (ভারত) সরকার)। বাইরে কী এসেছে? আমি আপনাদের বলছি, চিনের সঙ্গে যে কোনও সময় যুদ্ধ হতে পারে। তবে আমি আশা করব, যাতে এরকম না হয়। সাংবাদিক বৈঠক করে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলা উচিত।’
লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে ভারত এবং চিনের অবস্থান
ভারত প্রথম থেকেই জানিয়ে এসেছে, সীমান্তে সংঘাতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। সেখানে বেজিংয়ের অবস্থানে অনড় থেকে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই জানিয়েছেন, সীমান্ত সংঘাতকে আলাদা রেখে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত দু'দেশের। সেভাবেই এগিয়ে যেতে হবে।
চলতি বছর বেজিংয়ে চিনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ওয়াং বলেছেন যে 'সীমান্ত নিয়ে মতভেদকে নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করার জন্য সঠিক পথে এগিয়ে যাওয়া উচিত (ভারত এবং চিনের)।' সেইসঙ্গে চিনের বিদেশমন্ত্রী ই ওয়াং দাবি করেছিলেন, সার্বিকভাবে দু'দেশই যাতে লাভবান হয়, সেজন্য ভারতের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত আছে চিন।
যদিও বৈঠকের পরে জয়শংকর জানিয়েছিলেন, সীমান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য আরও পথ অতিক্রম করতে হবে। সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘(সীমান্তে যা) পরিস্থিতি, সেটাকে ওয়ার্ক ইন প্রগ্রেস (কাজ চলছে) পর্যায়ে আছে বলব। যা আশা করা হয়েছিল, তার থেকে অবশ্যই ঢিমেতালে (সেই কাজ) চলছে। আজ ওয়াং ই'য়ের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে, তাতে সেই প্রক্রিয়ায় আরও গতি আনার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল।’ সঙ্গে বলেছিলেন, ‘সীমান্তবর্তী এলাকায় যে উত্তেজনা আছে, গত দু'বছর ধরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে তার প্রভাব পড়েছে। এটা একেবারেই স্বাভাবিক। কারণ সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর শান্তি এবং সুস্থিতি বজায় রাখার উপরই স্থিতিশীল এবং সহযোগিতামূলক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি নির্ভর করে। সেই ভিত্তি মজবুত করা এবং বর্তমানে আমরা যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি, তা আটকানোর জন্য অবশ্যই আমাদের বিভিন্ন চুক্তি আছে।'