বালাসোরে ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন রেলমন্ত্রী। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে কিছু বলেননি রেলমন্ত্রী। অপরদিকে এই দুর্ঘটনার পর স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং পরিকাঠামো নিয়ে। এই আবহে ঠিক কী কারণে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। এদিকে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৩ হয়েছে। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত এই দুর্ঘটনার জেরে আহত হয়েছেন ৯০০ জন। অনেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন হাসপাতালে। বালাসোরের হাসপাতাল থেকে অনেককেই কটকে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।
অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, 'এটা খুবই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। রেল, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং রাজ্য সরকার উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে। সম্ভাব্য সর্বোত্তম স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হবে আহত যাত্রীদের। গতকালই ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।' রেলমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা আপাতত উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার ওপর নজর দিচ্ছি। জেলা প্রশাসনের ছাড়পত্রের পর রেললাইন মেরামতি এবং দুর্ঘটনাগ্রস্ত কামরা সরানোর কাজ শুরু হবে। একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ বিশদে খতিয়ে দেখা হবে। রেল নিরাপত্তা কমিশনারও একটি স্বাধীন তদন্ত করবেন।’ এদিকে জানা গিয়েছে, আজ দুর্ঘটনাস্থলে যাবেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। অপরদিকে আজ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্ঘটনাস্থলে যেতে পারেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ দোলা সেন। ওড়িশা এবং তামিলনাড়ুতে একদিনেকর শোকদিবস পালনের ঘোষণা করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ বালাসোর জেলার বাহানগা বাজার রেল স্টেশনের কাছে আপ শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে যায়। দুর্ঘটনার তীব্রতা এতই ছিল যে যাত্রীবাহী ট্রেনটির ইঞ্জিন উঠে যায় এক মালগাড়ির ওপর। ট্রেনের অধিকাংশ বগি ছিটকে পড়ে পাশের লাইনে। এই সময় উলটো দিক থেকে আসা যশবন্তপুর-হাওড়া হামসফর এক্সপ্রেসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে করমণ্ডলের লাইনচ্যুত বগিগুলিতে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ওড়িশার বালাসোর জেলার বাহানগা বাজার রেল স্টেশনের কাছে ১২৮৪১ আপ শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের একাধিক বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এর জেরে সেই ট্রেনের বি২, বি৩, বি৪, বি৫, বি৬, বি৭, বি৮, বি৯, এ১ এবং এ২ কোচ উলটে যায়। এছাড়া ট্রেনের ইঞ্জিন এবং বি১ কোচটি লাইন থেকে ছিটকে যায়। এই দুর্ঘটনার জেরে যশবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেসেরও বেশ কয়েকটি কামরা লাইনচ্যুত হয়।