উৎপল পরাশর
গত দু বছরে অসমের থানায় অশান্তির ঘটনায় ৩০জনের মৃত্যু হয়েছিল বলে খবর। সেই সময় অশান্তির ঘটনায় আহত হয়েছিলেন ১২জন। তবে বিজেপি শাসিত অসম সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে সেদিন কারোর মৃত্যু এনকাউন্টারে হয়নি। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার পক্ষে মন্ত্রী পীযূষ হাজারিকা এনিয়ে বিধানসভায় জবাব দিয়েছেন।
অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের বিধায়ক আমিনুল ইসলাম অভিযোগ তুলেছিলেন সরকার গোটা ঘটনাকে ঘিরে সাধারাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিধানসভায় তুমুল হইচই বেঁধে যায়। সামগ্রিক পরিস্থিতিতে বিধানসভার স্পিকার বিশ্বজিৎ ডায়ামারি এক ঘণ্টার জন্য বিধানসভার কাজকর্ম স্থগিত করে দেন।
লিখিত জবাবে অসমের মুখ্য়মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা উল্লেখ করেছেন, গত দুবছরে অসমে জঙ্গি কার্যকলাপের অন্তত ২৬টি ঘটনা হয়েছে। অন্যদিকে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ৩০জনের মৃত্যু হয়েছিল ও ১২জন আহত হয়েছিলেন।
অসমের মুখ্য়মন্ত্রী বিধানসভাকে অবহিত করেছেন যে, চলতি বছরে এনকাউন্টারের কোনও ঘটনা হয়নি। তবে পালানোর সময় সন্দেহভাজন দুষ্কৃতীরা পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছেন বা আহত হয়েছেন। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ২০১৯ সাল থেকে কোনও এনকাউন্টারে মৃত্যুর ঘটনা হয়নি।
তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে চলতি বছরের জুন মাসে অসম সরকার গুয়াহাটি হাইকোর্টে একটি হলফনামা জমা দিয়েছিল। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল, পুলিশি অ্যাকশনে ৫১জনের মৃত্যু হয়েছিল ও ১৩৯জন জখম হয়েছিলেন। সময়কাল হিসাবে ২০২১ সালের মে মাস থেকে ২০২২ সালের ২১ মে পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায়, ২০২১ সালের মে মাসেই অসমে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি।
এদিকে আইনজীবী আরিফ জোয়াদ্দার এনিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। এই মৃত্যুর সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলা করা হয়েছিল। তবে সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছিল এটা দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু। সেই সময় উল্লেখ করা হয়েছিল পুলিশি হেফাজত থেকে তারা পালানোর চেষ্টা করছিল। সেখানে কোনও 'extra judicial killing 'হয়নি।
এদিকে ন্যাশানাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর পরিসংখ্যান বলছে, অসমে এই ধরনের মৃত্যু ২০১৯ সালে ৫টি হয়েছিল, ২০২০ সালে ১টি হয়েছিল ও ২০২১ সালে ২টি মৃত্যুর ঘটনা হয়েছিল।
ন্যাশানাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর পরিসংখ্যান বলছে ২০২১ সালে ৬৫জন পুলিশ হেফাজত থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিল। একজনের পালানোর সময় মৃত্যু হয়েছিল। অপরজনের পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল।