বেসরকারি তেল খনন সংস্থার অপহৃত কর্মী ‘অনভিপ্রেত ঘটনায়’ মারা গেলে তার দায় বর্তাবে অসম ও অরুণাচল প্রদেশের দুই মুখ্যমন্ত্রীর উপরে। শনিবার এই হুমকি দিয়েছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ অসম-ইন্ডিপেন্ডেন্ট (উলফা-আই)।
গতকাল এক বিবৃতি প্রকাশ করে সংগঠনের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, অসম ও অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরা কুইপ্পো অয়েল অ্যান্ড গ্যাস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড সংস্থার দুই অপহৃত কর্মীর নিরাপত্তা ও মুক্তির কথা চিন্তা না করে ‘দীর্ঘসূত্রিতার কৌশল’ প্রয়োগের চেষ্টা করছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘উলফা-আই ও কুইপ্পোর মধ্যে বন্দি বিনিময় নিয়ে বিবাদের মীমাংসা না করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দেরি করে সামরিক অভিযান চালিয়ে দুই কর্মীকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। সামরিক অভিযানে সম্মতি দিয়েছেন দুই মুখ্যমন্ত্রী।’
গত ২১ ডিসেম্বর অরুণাচল প্রদেশের চ্যাংল্যাং জেলার ডিয়ুন এলাকায় কুইপ্পো সংস্থার ড্রিলিং লোকেশন থেকে অপহরণ করা হয় ড্রিলিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট প্রণব কুমার গগৈ এবং রেডিয়ো ওপারেটর রাম কুমারকে। গগৈয়ের বাড়ি অসমের শিবসাগর জেলায় এবং কুমার বিহারের খাগাড়িয়ার বাসিন্দা। অসম ও অরুণাচল প্রদেশে প্রাকৃতিক তেল ও গ্যাস ড্রিলিং সাইট চালায় তাঁদের নিয়োগকারী সংস্থা।
উলফা-আই এর বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘আমরা নিশ্চিত, দুই কর্মীকে জীবন্ত উদ্ধারের চেষ্টা না করে ভারতের প্রশাসন অভিযান চালিয়ে তাঁদের হত্যা করে তার দায় উলফা-আই এর কাঁধে চাপানোর পরিকল্পনা করেছে।’
সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, ‘এ ক্ষেত্রে বোঝাই যাচ্ছে যে আগামী দিনে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান চলাকালীন দুই কুইপ্পো কর্মীর অনভিপ্রেত ঘটনার জেরে মৃত্যু হতে পারে। এমন হলে, তার সম্পূর্ণ দায় নিতে হবে অসম ও অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং ভারতীয় বাহিনীদের।’
গত ১২ জানুয়ারি উলফা-আই কম্যান্ডার-ইন-চিফ পরেশ বরুয়া স্থানীয় টিভি চ্যানেলে দুই কুইপ্পো কর্মীকে অপহরণের তথ্য স্বীকার করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, অসম ও উত্তর পূর্ব ভারতের অবশিষ্ট অংশ থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ উদ্ধার করার সময় তাঁর সংগঠনের প্রাপ্য মিটিয়ে না দিলে বলি হতে হবে বিহারের বাসিন্দা রাম কুমারকে। তবে অসমের ভূমিপুত্র হওয়ার কারণে গগৈকে হত্যা করা হবে না বলেও জানিয়েছিলেন উলফা-আই প্রধান।
পরে ২৮ জানুয়ারি দুই অপহৃত কর্মীকে উদ্ধারের জন্য ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় জঙ্গি সংগঠন। সময়সীমা অতিক্রম করলে কুমারকে হত্যা করা হবে বলেও সংগঠনের তরফে হুমকি দেওয়া হয়।