অসমে বাঙালি ও অসমিয়াদের মধ্যে সম্প্রীতি বৃদ্ধির জন্য এবার নগদ রাশি দেওয়ার প্রস্তাব উঠল। এই সুপারিশ করেছে Assam Linguistic Minority Development Board (ALMDB). মুখ্যমন্ত্রী সরবানন্দ সোনোওয়ালের কাছে এই প্রস্তাব জানিয়েছে তারা। প্রস্তাব গৃহীত হলে এই বছরের বাজেটে এর জন্য টাকা বরাদ্দ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
ALMDB-র চেয়ারম্যান অলোক কুমার ঘোষ জানান যে দুই গোষ্ঠীর মধ্য ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও সুদৃঢ় করতে ও রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। নিজেদের জাতির বাইরে গিয়ে যারা বিয়ে করছেন, তাদের নগদ অর্থ দেওয়ার সুপারিশ বোর্ডের।
অলোকবাবু জানিয়েছেন যে অনেক সময় পরিবারের অমত থাকে এরকম বিয়ের ক্ষেত্রে। বিপাকে পড়েন দম্পতি। তাই সরকারের তাদের সমর্থন করা উচিত যাতে জীবন নির্বাহ করতে অসুবিধা না হয়। নগদ রাশি পেলে ভিন জাতিতে বিয়ে করা দম্পতিরা ছোটো ব্যবসা অন্তত শুরু করতে পারবে বলে মনে করেন তিনি। সরকারের ছাড়পত্র পেলে কেবল আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারদেরই এই সুবিধা দেওয়া হবে।
গত বছর বাজেটে গরীব পরিবারের মেয়েদের বিয়েতে দশ গ্রাম সোনা (৩০,০০০ টাকা) দেওয়ার জন্য টাকা বরাদ্দ করেছিল অসম সরকার। এবার সেরকমই বরাদ্দ চাইছে ALMDB। অলোকবাবুর কথায় ৩০০০০ টাকা পেলেও ছোটো একটি পানের দোকান বা বিউটি পার্লার খুলে ফেলা সম্ভব। তবে অহিন্দু বাঙালিরা এই প্রকল্পের সুযোগ পাবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রখ্যাত সাহিত্যিক লক্ষীনাথ বেজবরুয়া ও তাঁর বাঙালি বউ প্রজ্ঞাসুন্দরী দেবীর মূর্তি স্থাপন করার প্রস্তাব দিয়েছে বোর্ড। প্রসঙ্গত, প্রজ্ঞাসুন্দরী দেবী হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাগ্নী। শিলিগুড়িতে ভূপেন হাজারিকার মূর্তি স্থাপনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।
২০১১ সেনসাস অনুয়াযী, অসমে প্রায় ৯০ লক্ষ বাঙালি আছেন, তার মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ হিন্দু। এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে All Assam Minority Students Union-এর প্রেসিডেন্ট রেজাউল করিম সরকার। এটি মানুষকে ধর্মের নিরিখে ভাগ করার নয়া ফন্দি বলে তিনি মনে করেন। শুধু যদি গরীবদের সাহায্য দেওয়ার কথা হতো, তাহলে কোনও সমস্যা ছিল না বলে জানান রেজাউল।
আগামী বছর অসমে ভোট। তার আগে রাজ্যে বিজেপি হিন্দু ভোটব্যাংককে সুরক্ষিত করার জন্য এই সাম্প্রদায়িক নিয়ম আনতে চাইছে বলে রেজাউলের দাবি।