অসমের ডিমা হাছাও জেলার কয়লা খনি দুর্ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিচার বিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত দেওয়া হল। এদিন রাজ্য মন্ত্রিসভার তরফে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে, এই ঘটনার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ ,তদন্তকারী দল (সিট) গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসেই ঘটে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা। খনির ভিতর জল ঢুকে যাওয়ায় এখনও পর্যন্ত চার শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও পাঁচজন। যদিও তাঁদের বেঁচে থাকার আশা নেই বললেই হয়। এমনটাই দাবি সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
রাজ্য মন্ত্রিসভায় আরও স্থির করা হয়েছে, এই ঘটনায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের পরিবারকে এককালীন ১০ লক্ষ টাকার অর্থসাহায্য করা হবে। এখনও পর্যন্ত যে চার শ্রমিকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের সকলের পরিবারই এই আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাবে।
বাকি যে পাঁচ শ্রমিকের আজ পর্যন্ত কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি, তাঁদেরও পরিবারকে এই একই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, গত প্রায় ১০ দিন ধরে একাধিক উদ্ধারকারী দল ওই শ্রমিকদের খোঁজে তল্লাশি চালিয়েও কোনও সাফল্য পায়নি।
গত ৬ জানুয়ারি ডিমা হাছাও জেলার ৩ কিলোয় অবস্থিত ওই খনিতে বেআইনিভাবে ঢুকে পড়েন প্রায় ৪০ জন শ্রমিক। সেই সময় হঠাৎই খনিতে জল ভরতে শুরু করে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, ভূগর্ভস্থ কোনও প্রস্রবণের কারণেই এই অঘটন ঘটে যায়।
এই ঘটনার পর প্রায় ২৫ জন শ্রমিক কোনও মতে খনি থেকে উঠে আসতে সমর্থ হন। কিন্তু, বাকি অন্তত ৯ জন শ্রমিক কুয়োর আকৃতিবিশিষ্ট প্রায় ৩০০ ফুট গভীর সেই খনিতে আটকে পড়েন।
বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার সঙ্গে বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সাংবাদিকদের বলেন, 'দুর্ঘটনার পর প্রায় ১০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এখন তাঁদের কাউকে জীবিত উদ্ধার করার সম্ভাবনা নেই বললেই হয়। আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাঁদের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং যাঁদের এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি, দুই পক্ষেরই প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।'
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, এই ঘটনায় মন্ত্রিসভা বিচার বিভাগী তদন্তেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার নেতৃত্ব দেবেন গুয়াহাটি হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অনিমা হাজারিকা। এই তদন্ত কমিশন ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা উচিত, সেই বিষয়ে রিপোর্ট পেশ করবে। আগামী তিনমাসের মধ্যে এই রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও, মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে অসম পুলিশের ডিজি জি পি সিংকে একটি সিট গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিচার বিভাগীর কমিশনের তদারকিতে সিট তার তদন্ত প্রক্রিয়া চালাবে।