অসমের বিজেপি প্রার্থী নীহাররঞ্জন দাসের ভারতীয় নাগরিক হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পালটা কংগ্রেসকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
তাঁর বক্তব্য, নীহাররঞ্জনের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলার অর্থ হল, বরাক উপত্যকায় বসবাসকারী প্রত্যেক হিন্দুকেই বিপদে ফেলা। আর সেটা করেই কংগ্রেস আগেকার অন্ধকারময় দিনগুলি ফেরত আনতে চাইছে!
সোমবার কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, অসমের ধলাই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী নীহাররঞ্জন দাসের বাবা-মা এখনও বাংলাদেশেই থাকেন। এবং নীহাররঞ্জন নিজেও ১৯৭১ সালের পর ভারতে এসেছেন। তাহলে তিনি ভারতের নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন কীভাবে? কারণ, তিনি কি আদৌ ভারতের নাগরিক?
উল্লেখ্য, আগামী ১৩ নভেম্বর অসমের যে পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে, ধলাই তার মধ্যে অন্যতম।
কংগ্রেস কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিতেন্দ্র সিং এই প্রসঙ্গে বলেন, একজন ভোটপ্রার্থীর বাবা কীভাবে এখনও বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে সেদেশে বসবাস করছেন, বিজেপিকে সেই জবাব দিতেই হবে।
জিতেন্দ্রর বক্তব্য ছিল, 'এই অভিযোগ বিজেপিরই একজন প্রবীণ নেতা করেছেন। এবং আমি আশা করছি, হিমন্ত বিশ্বশর্মা অবশ্যই সেই প্রশ্নের জবাব দেবেন।'
এদিকে, মঙ্গলবার ধলাই আসেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তখন এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই এই সমস্যার সমাধান করে ফেলেছি। যার ফলে হিন্দুরা আশ্বস্ত হতে পেরেছেন। কিন্তু, কংগ্রেস খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে বিষয়টি ফের খুঁচিয়ে তুলতে চাইছে।’
প্রসঙ্গত, নীহাররঞ্জনের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রথম প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রবীণ বিজেপি নেতা অমিয়কান্তি দাস। বিধানসভা উপনির্বাচনে দলের তরফে টিকিট না পাওয়ার পর যিনি ইতিমধ্যেই বিজেপির সাধারণ সদস্য পদে ইস্তফা দিয়েছেন।
এরপর ধলাই কেন্দ্র থেকেই নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পেশ করেন তিনি। কিন্তু, বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পর সেই মনোনয়ন প্রত্যাহারও করে নেন।
এই প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার ধলাই বিধানসভা কেন্দ্রে একটি নির্বাচনী জনসভা করেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। সেই মঞ্চ থেকে অমিয়কান্তির প্রশংসা করেন তিনি। এই প্রশংসার কারণ হল অমিয়কান্তির মনোনয়ন প্রত্যাহার।
এই প্রসঙ্গে হিমন্ত বলেন, 'আমি ওঁকে ডেকে পাঠাই। এবং তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে রাজি হয়ে যান। ওঁর এই সিদ্ধান্তকে আমাদের সাধুবাদ জানানো উচিত।'
অথচ, মাস খানেক আগে এই অমিয়কান্তিকেই নীহাররঞ্জন সম্পর্কে বলতে শোনা গিয়েছিল, 'আমরা কোনও দিন নীহাররঞ্জন দাসের বাবা-মাকে এখানে দেখিনি। তিনি নিজেও একজন বহিরাগত। আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে - ওঁর বাবা-মা একটা অন্য দেশের নাগরিক। এই যাঁর পরিচয়, তাঁর অন্তত আমাদের প্রতিনিধিত্ব করা উচিত নয়।'
যদিও মঙ্গলবার হিমন্ত বিশ্বশর্মা দাবি করেন, ক্ষোভের মুখে অমিয়কান্তি কিছু কথা বলেছিলেন। সেগুলিকে গুরুত্ব দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমরা বিষয়টা মিটিয়ে নিয়েছি। অমিয় এখন আমাদের সঙ্গেই আছেন। নীহার বহু বছর ধরে এখানে থাকে। এনআরসি-তেও ওঁর নাম আছে। এখানেই তিনি দশম শ্রেণির পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছিলেন। তিনি আমাদেরই লোক এবং আমরা তাঁকে খুব ভালো করেই চিনি।'