মাসখানেক আগে মালগাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল একটি মাদি হাতি ও শাবকের। সেই ঘটনায় রেলের একটি ইঞ্জিন বাজেয়াপ্ত করল অসমের বন দফতর। যা একেবারে নজিরবিহীন। ভারতের কোথাও আগে এরকম ঘটনা ঘটেছে কিনা, তা বহু চেষ্টা করেও মনে করতে পারছেন প্রবীণ বন আধিকারিকরা।
অসমের বন দফতর জানিয়েছে, গত ২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যবর্তী রাতে হোজাই জেলার লুমডিংয়ের পাথরখোলা স্টেশনের কাছে লাইন পার হওয়ার চেষ্টা করছিল একটি মাদি হাতি এবং তার শাবক। সেই সময় একটি মালগাড়ির ধাক্কায় তাদের মৃত্যু হয়। শুধু তাই নয়, দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে এক বছরের শাবকটিকে প্রায় এক কিলোমিটার টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছিল ট্রেনটি। তারপর সেই ট্রেন দাঁড়িয়েছিল।
সেই ঘটনার পর বিভাগীয় তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মালগাড়ির লোকো-পাইলট এবং তাঁর সহকারীকে সাসপেন্ড করে দিয়েছিল রেল। মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের বানুনিময়দান লোকোমোটিভ শেড থেকে সেই ঘাতক ইঞ্জিনটি বাজেয়াপ্ত করেছেন বন আধিকারিকরা। তাঁদের বক্তব্য, আগেও ট্রেনের ধাক্কায় অনেক প্রাণ হারিয়েছে হাতি। কিন্তু সেজন্য লোকোমোটিভ ইঞ্জিন বাজেয়াপ্ত করার ঘটনা নজিরবিহীন।
অসমের মুখ্য বন্যপ্রাণ ওয়ার্ডেন এমকে যাদব বলেন, 'দেশে সম্ভবত এটা প্রথম ঘটনা যেখানে রেললাইনে মৃত্যু সংক্রান্ত কারণে রেলওয়ে লোকোমোটিভ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।' তিনি জানিয়েছেন, ঘাতক ইঞ্জিনকে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হবে। একইসঙ্গে রেলের বিরুদ্ধে ১৯৭২ সালের বন্যপ্রাণ (সুরক্ষা) আইনের ধারা চাপানো হবে।
লুমডিংয়ের বিভাগীয় বন আধিকারিক পুলক চৌধুরী জানিয়েছন, যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা হাতির চলাচলের মধ্যে পড়ে। সেজন্য সেখানে ট্রেনের গতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটারের মধ্যে রাখতে হয়। কিন্তু দুর্ঘটনার দিন ট্রেনের গতি বেশি ছিল বলে জানিয়েছেন ওই বন আধিকারিক। তিনি বলেন, ‘রেলের বিভাগীয় তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় ট্রেনটি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটারের মতো গতিতে চলছিল। তার জেরে দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছি এবং নিজেরাও তদন্ত চালাচ্ছি।’