অসমে স্কুল শিক্ষকদের বদলি সংক্রান্ত নতুন আইন আনতে চলেছে প্রশাসন। এই উদ্যোগে ক্ষোভ প্রকাশ করল রাজ্যের শিক্ষক সংগঠন।
মঙ্গলবার অসমের শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বিধানসভায় জানিয়েছেন, চলতি বাজেট অধিবেশনেই শিক্ষকদের বদলি সংক্রান্ত নয়া আইন পেশ করা হবে। আইন পাশ হলে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের প্রথম পোস্টিংয়ে ১০ বছর কাজ করা বাধ্যতামূলক হতে চলেছে। তার পরেই তাঁরা বদলির জন্য বিবেচিত হবেন।
প্রথম কর্মস্থানে ১০ বছর কাজ করার পরে বদলির জন্য অনলাইনে আবেদন জানাতে পারবেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষক। দক্ষতা অনুযায়ী এর পরে তাঁদের বদলির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষকদের বদলির আবেদন বিবেচনা করার জন্য গঠন করা হবে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কমিশন।
বর্তমানে যে সমস্ত শিক্ষক বদলির জন্য আবেদন করবেন এবং যে সমস্ত আধিকারিক নতুন আইন ভঙ্গ করে আবেদন মঞ্জুর করবেন, তাঁদের তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড হতে পারে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে মানবিকতার কারণে ব্যতিক্রম ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, ‘যে হেতু গত তিন বছরে বেশ কয়েক জন শিক্ষক ক্রমাগত বদলির অন্যায্য সুবিধা নিয়েছেন, আমরা সেই সমস্ত পোস্টিং বাতিল করব এংবং তাঁদের পুরনো কর্মস্থানেই ফেরত পাঠাব।’
নতুন আইন চালু হলে সরকারি স্কুলে বহাল প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষক প্রভাবিত হবেন বলে জানা গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে অসম রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের (ASPTA) সাধারণ সম্পাদক রাতুল চন্দ্র গোস্বামী জানিয়েছেন, ‘প্রস্তাবিত আইনের সঠিক বিস্তারিত তথ্য এখনও অজানা। তবে ওঁরা যদি সংবিধানে উল্লিখিত অধিকার লঙ্ঘন করেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হব।’
তাঁর মতে, শিক্ষকদের টানা ১০ বছর কোনও নির্দিষ্ট কর্মস্থানে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত অবাস্তব হতে পারে, কারণ কয়েক বছর অন্তর সরকারি স্কুলগুলিতে ছাত্রসংখ্যায় দ্রুত হারে পরিবর্তন ঘটছে।
এই প্রসঙ্গে সারা অসম উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মী সংগঠনের (AAHSTEA) সাধারণ সনম্পাদক সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষকদের ক্ষেত্রে অসমে কোনও সুস্পষ্ট নীতি চালু নেই বলে আমরা সরকারকে তা প্রণয়নের অনুরোধ জানিয়েছিলাম। প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই, তবে প্রস্তাবিত আইনের খুঁটিনাটি নিয়ে শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত।’
সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘তবে ১০ বছর একই কর্মস্থানে বহালের বিষয়টি একটু বেশি দীর্ঘ বলে মনে হচ্ছে। সময়সীমা কমিয়ে ৫ বছর করা উচিত। আইন ভাঙলে সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান একটু বেশি কঠোর হয়ে যাচ্ছে। সরকারকে দেখতে হবে, সংবিধান এই অপরাধে এত কঠিন শাস্তির বিধান দিয়েছে কি না।’