সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারত বিরোধী পোস্টে লাইক করায় বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হল সেদেশের এক ছাত্রীকে। এমনই অভিযোগ উঠেছে অসমের শিলচরে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (এনআইটি) বিরুদ্ধে। সোমবার সকালে ওই বাংলাদেশি ছাত্রীকে করিমগঞ্জের ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে চলে যান ওই ছাত্রী। এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যদিও এই দাবি অস্বীকার করেছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তার দাবিতে কলকাতার রাজপথে মিছিল হিন্দু জাগরণ মঞ্চের
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কাছাড়ের পুলিশ সুপার নুমাল মাহাত্তা জানান, এক ছাত্রীকে সোমবার সকালে করিমগঞ্জের ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ছাত্রীটি বাংলাদেশে চলে যান।
তবে, এনআইটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই ছাত্রী নিজের ইচ্ছাতেই কিছুদিনের জন্য বাড়ি ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। রবিবার ছুটির জন্য আবেদন করেছিলেন। তার ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশে বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ছাত্রী যথাযথ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলেন। সেইমতো তিনি বাড়ি গিয়েছেন। তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করেছেন নিটের রেজিস্ট্রার। এছাড়াও ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হয়নি বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, পুলিশ সুপার জানান, বাংলাদেশের প্রায় ৭০ জন পড়ুয়া শিলচর এনআইটির বিভিন্ন শাখায় পড়াশোনা করছে। জানা গিয়েছে, ভারত বিরোধী পোস্ট করেছিলেন বাংলাদেশের এক প্রাক্তন ছাত্র। সেও আগে ওই প্রতিষ্ঠানে পড়ত। সেই পোস্টেই সমর্থন করেছিলেন ছাত্রী। এসপি বলেন, ‘আমরা ছাত্রের ভারত বিরোধী পোস্টের জন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে কথা বলতে প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে বলেছি।’
গত ২২ অগস্ট অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র শুভাশিস চৌধুরী প্রথম এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। তিনি ছাত্রের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলির কিছু স্ক্রিনশট শেয়ার করেন। পরে শিলচর এবং অসমের অন্যান্য অঞ্চলে একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। তারপরই পুলিশ সুপার ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেন এবং তদন্ত শুরু হয়। পরে তিনি জানতে পারেন ওই ছাত্র ইতিমধ্যেই ভারত ছেড়ে বাংলাদেশে রয়েছে।
শিলচর এনআইটির ডিরেক্টর, প্রফেসর দিলীপ কুমার বৈদ্য বলেছেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে জানেন। তাঁরা প্রতিষ্ঠানে শান্তি, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছেন যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। বাংলাদেশ সহ বিদেশ থেকে পড়ুয়ারা এখানে পড়াশোনা করতে আসে। তারা যেন অন্য পড়ুয়াদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে থাকে তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।’ তিনি জানান, তদন্তে নিট কর্তৃপক্ষ পুলিশকে সহযোগিতা করবে।