পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বলছে জাতীয় রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে কংগ্রেস। এই অস্তিত্ব সংকট থেকে তারা কি করে বেরিয়ে আসবে তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। এমনকী বিজেপির বিরুদ্ধে তাদের শক্তি একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। সকালেই গো–বলয়ে সেঞ্চুরি পার করে গেরুয়া শিবির। বেলা বাড়তেই পেরিয়ে যায় ২০২–এর যাদু সংখ্যাও। পরে সেই সংখ্যা ২৫৮ পৌঁছে যায়। ফলে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির সরকার গড়া এখন শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। অন্যদিকে সরকার গড়ার দৌড়ে সমাজবাদী পার্টি পড়ে রয়েছে কয়েক যোজন দূরে। ফলে এবারেও ১৪০টি আসন দখল করেই দ্বিতীয় স্থানেই থাকতে হবে অখিলেশ অ্যান্ড কোম্পানিকে। অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে কংগ্রেস।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রশ্ন উঠেছিল, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন? যার উত্তরে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেছিলেন, ‘কংগ্রেসের পোস্টারে আর কোনও নেতার ছবি দেখা যাচ্ছে কি? উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ আমিই!’ এখন এই ফলাফলের পর তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে অখিলেশ যাদব টুইট করে বলেছেন, ‘পরীক্ষা এখনও বাকি। গণনাকেন্দ্রগুলিতে সতর্কভাবে যাঁরা সক্রিয় রয়েছেন তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি সপা-জোটের প্রত্যেক কর্মী-সমর্থক, নেতা ও শুভানুধ্যায়ীদেরও ধন্যবাদ।’ উত্তরপ্রদেশের পাশাপাশি মণিপুরেও সরকার গঠনের পথেই এগোচ্ছে বিজেপি। ইতিমধ্যেই ২৮টি আসন পেয়ে সরকার গড়ার পথ প্রশস্ত করছে তারা। শুরুতে কিছুটা লড়াই দেওয়ার পর সেখানেও পিছিয়ে পড়ে কংগ্রেস ব্রিগেড। মাত্র ৯টি আসনে এগিয়ে থাকতে দেখা যায় তাদের। এনপিএফ ৫ এবং এনপিপি’র ঝুলিতে এসেছে ৮টি আসন। অন্যান্যদের ঝুলিতে রয়েছে ১০টি আসন।
২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট করেছিল কংগ্রেস। তখন রাহুল গান্ধীকে সামনে রেখেই লড়েছিল কংগ্রেস। পেয়েছিল সাতটি আসন। প্রিয়াঙ্কা পরে অবশ্য বলেছিলেন, জোট বাঁধা ভুল হয়েছে। সেই ভুলের পাঁচ বছর পর এবার তাঁকে সামনে রেখে উত্তরপ্রদেশে একা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করল কংগ্রেস। গত ৩০ বছরে এই প্রথম উত্তরপ্রদেশের ৪০৩টি বিধানসভা কেন্দ্রেই প্রার্থী দিয়েছিল দল। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হল না। বরং অস্তিত্ব সংকটে পড়ল কংগ্রেস।
গোয়ায় ম্যাজিক ফিগার ২০ পৌঁছে গিয়েছে বিজেপি। কংগ্রেস সেখানে ১২টি আসনে এগিয়ে। আপ দুটি আসনে জয়ী হয়েছে। চারটি করে আসনে এগিয়ে রয়েছে অন্যান্য এবং এমজিপি–তৃণমূল জোট। উত্তরাখণ্ডেও চিত্রটা একইরকম। প্রথমদিকে বিজেপি–কংগ্রেসের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। কিন্তু পরে সেখানেও ৪৩ আসনে এগিয়ে যায় বিজেপি। ৩৬-এর ম্যাজিক ফিগার পেরিয়ে যায় তারা। কংগ্রেসের গ্রাফ আটকে যায় ২৩টি আসনের মধ্যেই। তাদের হেভিওয়েট নেতা হরিশ রাওয়াত, যশপাল আরিয়া, তিলক রাজ বেহার সকলেই বিজেপি প্রার্থীদের কাছে পিছিয়ে পড়ে।
পাঞ্জাবে পর্যুদস্ত হয়েছে বিজেপি–কংগ্রেস–অকালি দল। নিজের গড় পাতিয়ালায় হারের মুখ দেখতে হয়েছে কং নেতা অমরিন্দর সিংকে। বরং আশ্চর্যজনক ভাবেই পাঞ্জাবে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে ম্যাজিক ফিগার পেরিয়ে গিয়েছে আপ। ৯১টি আসন নিয়ে নিশ্চিতভাবেই সেখানে সরকার গড়তে চলেছে তারা। ১৭টি আসনে এগিয়ে আছে কংগ্রেস এসএডি এগিয়ে ৬টি আসনে। বিজেপি ২টি এবং অন্যান্যরা এগিয়ে ১টি আসনে। সুতরাং কোথায় কংগ্রেস প্রাসঙ্গিক নয়। অস্তিত্ব সংকটেই পড়ল সোনিয়া গান্ধীর দল।