সামনেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সে কথা মাথায় রেখেই আপাতত বন্ধ পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে, অর্থাত্ নির্বাচন কমিশনের ঘোষণার পরের দিন থেকেই স্থির হয়ে আছে পেট্রল-ডিজেলের দাম।
গত প্রায় এক সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ১২% বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণত এই অপরিশোধিত তেলের দামের উপর ভিত্তি করে পেট্রোপণ্যের দাম খুচরো বাজারে ওঠা নামা করে। অন্তত সেই যুক্তিই চলত এত দিন। তবে ভোট ঘোষণার পরের দিন থেকে আপাতত খাটছে না সেই পন্থা। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচুর দাম বাড়লেও দিব্যি একই দামে বিকোচ্ছে পেট্রল, ডিজেল। পশ্চিমবঙ্গে এখন পেট্রলের দাম ৯১.৩৫ টাকা প্রতি লিটার।
অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লে কেন অপরিবর্তিত থাকছে পেট্রলের দাম? অতিরিক্ত দামের বোঝাটাই বা কে বইছে? প্রথম প্রশ্নের উত্তরে সমালোচকদের দাবি বিষয়টা কাকতালীয় নয়। ভোট ঘোষণার পরেই এমনটা হওয়ায় যেন আরও বেশি চোখে পড়ছে তাঁদের।
আর দ্বিতীয় প্রশ্নটা? আসলে এই অতিরিক্ত দাম দিয়ে কেনার খরচটা ভাগ হচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্যের কর এবং তেলের সংস্থাগুলির মধ্যে। কেন্দ্রের এক্সাইজ ডিউটি ও রাজ্যের ভ্যাট-এর হার একই থাকলেও কমেছে টাকার পরিমাণ।
তবে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বেশ দ্রুত হারে বেড়েই চলেছে অপরিশোধিত তেলের দাম। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই সৌদি আরবে হুথি মিসাইল হানার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরামকোর বিশাল তৈল সংরক্ষণ কেন্দ্র। তাছাড়া এর আগেও তেল প্রদানকারী দেশগুলির কম সরবরাহের কারণে ক্রমেই বেড়েছে চাহিদা। ফলে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দাম। এসব কারণে আরও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তেলের দাম।
এই একই অপরিশোধিত তেলের দাম গত বছর ২১ এপ্রিল ছিল মাত্র ২০ ডলার প্রতি ব্যারেল। আর চলতি সপ্তাহে সোমবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭১.৩৮ ডলার প্রতি ব্যারেল। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধি সত্যিই চিন্তার বিষয়।
তবে, ভোটের বালাই হোক, বা একটু স্বস্তি দেওয়ার প্রচেষ্টা- পেট্রোপণ্যের লাগাতার মূল্যবৃদ্ধি একটু থমকে যাওয়ায় আপাতত একটু হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন সাধারণ মানুষ। শহরের এক পেট্রল পাম্পে জনৈক বাইক আরোহী একটু বেশি আশার কথাও শোনালেন, 'ভোটের আগে আগে দামটা পড়বে নাকি?'