সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে ছাত্র আন্দোলন সরকারবিরোধী বিক্ষোভের রূপ নেয়। তারপরই পদত্যাগ করতে বাধ্য হন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইস্তফা দেওয়ার পরই ঢাকা থেকে পালিয়ে আপাতত ভারতে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছেন তিনি। কিন্তু, হাসিনা সরকারের পতনের পরে চরম নৈরাজ্য তৈরি হয়েছে দেশটিতে। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরও বাংলাদেশে হিংসা থামছে না। বুধবারও হিংসায় বাংলাদেশে মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। অনেকেই আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই বুধবার মারা গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: দুদিন বন্ধ থাকার পর ভারত- বাংলাদেশের মধ্যে একাধিক স্থলবন্দরে ফের শুরু হল বাণিজ্য
গত মাস থেকেই কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন চলছিল। তাতে কয়েকশো বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেই সেই আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়েছিল। তবে গত শনিবার থেকে ফের নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। সোমবার চরম আকার ধারণ করে সেই গণআন্দোলন। যার ফলে এদিন ইস্তফা দিয়ে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হন হাসিনা। বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের দাবি, সোমবার থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র তিন দিনে ২৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই হিসেবে গত ২৩ দিন ধরে আন্দোলন চলাকালীন বাংলাদেশে ৫৬০ নিহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
সোমবার হিংসায় ঢাকার সাভারে হিংসার ঘটনায় অনেককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তারমধ্যে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার গাজীপুরের কাশিমপুর জেল থেকে পালানোর সময় নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ৬ জন বন্দির। এছাড়া মেহেরপুরের গাংনীতে বিক্ষোভকারীদের হামলায় একজন নিহত এবং সাত জন আহত হয়েছেন।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার সাদেকপুরে আওয়ামী লিগ ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে । তাতে একজন নিহত হয়েছেন। এদিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ আরও ১০ জনের মৃতদেহ আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ জন পুলিশ কর্মী ও একজন রাজনৈতিক দলের সদস্য। নিহত ৬ পুলিশ কর্মীর নাম হল এসআই সুজন চন্দ্র দে (৪২), সহকারী এএসআই ফিরোজ হোসেন (৪২) কনস্টেবল রেজাউল করিম(৪৮), এসআই খগেন্দ্র চন্দ্র সরকার (৪৯), কনস্টেবল শহিদুল আলমের (৪৮) ও এএসআই রাজু আহমেদ (৩০)। এর মধ্যে প্রথম চারজনকে পিটিয়ে ফোন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত কয়েকদিনের হিংসায় শুধু ঢাকার সাভারেই নিহতের সংখ্যা ছিল ৩৪ জন।