শিয়া ও সুন্নি গোষ্ঠীভুক্ত মুসলমানদের বিবাদের জেরে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পড়শি পাকিস্তান। সূত্রের খবর, এই বিবাদের ফলে ইতিমধ্যেই রক্ত ঝরতে শুরু করেছে। প্রাণ যাচ্ছে আমনাগরিকদের।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে, এই ধরনের বিবাদের কথা পাক প্রশাসনের আধিকারিকরাও স্বীকার করে নিয়েছেন।
শোনা যাচ্ছে, আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া, পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম অংশে অবস্থিত খাইবার পখতুনখোয়া প্রদেশে শিয়া ও সুন্নি মুসলমানদের মধ্যে বিবাদ চরমে উঠেছে।
এর ফলে গত কয়েক দিনে অন্তত ২৫ জনের প্রাণ গিয়েছে। ঘটনাগুলি ঘটেছে মূলত খাইবার পখতুনখোয়া প্রদেশের কুররাম জেলার নানা অংশে।
গত সপ্তাহান্ত থেকে নতুন করে এই বিবাদ শুরু হলেও, বিবাদের কারণ নাকি বহু পুরোনো। আসলে জমির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় শিয়া ও সুন্নি গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা লেগেই থাকে। এ হল তারই চরম বহিঃপ্রকাশ।
গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে দু'পক্ষেরই বহু মানুষ আহত হয়েছেন। প্রাণ বিসর্জনও দিতে হয়েছে অনেককে। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ বুধবার পর্যন্ত থামানো সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, তারা এই বিবাদ মেটাতে লাগাতার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হল, দুই গোষ্ঠীর মধ্যেই কট্টরপন্থী নেতারা উপস্থিত রয়েছেন। অনুমান করা হচ্ছে, এই কারণেই সংঘর্ষে রাশ টানতে বেগ পেতে হচ্ছে পাক প্রশাসনকে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক আধিকারিক জানিয়েছেন, তাঁরা সরাসরি ওই দুই গোষ্ঠীর স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করছেন। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের দাবি, কুররামে যাতে শান্তি বজায় থাকে, তার জন্য দুই পক্ষই সংঘর্ষ বিরতিতে সায় দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানে সুন্নি মুসলমানদেরই সংখ্যা বেশি। বর্তমানে আমাদের পড়শি এই রাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৪ কোটি। তার মধ্যে শিয়া মুসলমান রয়েছেন প্রায় ১৫ শতাংশ। বাকিরা প্রায় সকলেই (অন্য সংখ্যালঘুদের বাদ দিলে) সুন্নি মুসলমান।
দেশের অধিকাংশ অংশে এই দুই গোষ্ঠী পরস্পরের সঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করলেও, নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে গোষ্ঠী বিবাদ রয়েছে। কুররাম তার মধ্যে অন্যতম। এই জেলার কয়েকটি অংশে শিয়া মুসলমানদের আধিপত্য রয়েছে।
গত জুলাই মাসেও একইরকম সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। যার জেরে সেবারও বহু মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছিল। আবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় কপালে ভাঁজ পড়েছে পাক প্রশাসনের। রক্তক্ষয়ী বিবাদ মেটাতে শুরু হয়েছে তৎপরতা।