ভয়াবহ একটি 'হিট অ্যান্ড রান'-এর সাক্ষী হতে হল চিনের ঝুয়াইয়ের বাসিন্দাদের। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এই ঘটনায় কমপক্ষে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে! আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪৩ জন!
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ঝুয়াইয়ের একটি ক্রীড়া কেন্দ্রে অনুশীলন করছিলেন একসঙ্গে অনেক জন। সেই সময়েই সেখানে দ্রুত গতির বেপরোয়া একটি চারচাকা গাড়ি চলে আসে।
কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই একের পর এক মানুষকে চাকায় পিষে, সজোরে ধাক্কা মেরে এগিয়ে যায় সেই গাড়ি। তাতেই মুহূর্তে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ঘটনাস্থল। হতাহতদের রক্তে ভেসে যায় আশপাশ।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, যে ঘাতক এত মানুষের মৃত্যুর কারণ, তিনি একজন ৬২ বছরের বৃদ্ধ। পুলিশ ইতিমধ্যেই তাঁকে গ্রেফতার করেছে। তবে, এই ঘটনা নেহাতই কোনও দুর্ঘটনা, নাকি কোনও সন্ত্রাসবাদী হামলার অংশ, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়।
সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সেই তদন্ত শেষ হলেই সবকিছু স্পষ্ট হবে।
উল্লেখ্য, প্রতি বছরই চিনের সেনাবাহিনী ওই শহরে একটি বার্ষিক উড়ান প্রদর্শনী উপস্থাপিত করে। সেই উপস্থাপনা হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার। তার ঠিক আগের রাতে এমন ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই শহরের নিরাপত্তা ও নজরদারি ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির পারিবারিক নাম ফ্যান। তবে, এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তরফে খুব বেশি তথ্য প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
এমনকী, ঘটনার সময়কার ছবি ও ভিডিয়োও রয়েছে হাতে গোনা। সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনা প্রসঙ্গে আগের সন্ধ্যায় যে সমস্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল, তাও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে!
এমনকী, এই ঘটনা নিয়ে যাতে সোশাল মিডিয়াতেও সেভাবে প্রচার না হয়, তা নিশ্চিত করতে কঠোর নজরদারি শুরু করেছে চিনা সরকার ও প্রশাসন।
সূত্রের দাবি, ন্যাশনাল পিপল'স কংগ্রেস-এর কর্মসূচি চলাকালীন এই ঘটনা নিয়ে খুব বেশি আলোচনা হোক, সেটা চাইছে না বেজিং। প্রসঙ্গত, এই কর্মসূচিতেই আগামী বছরগুলির জন্য নীতি ঘোষণা করবে চিনা সরকার।
প্রসঙ্গত, চিনে এর আগেও নাগরিকরা এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন। এমনকী, স্কুলের বাচ্চাদের উপরেও নেমে এসেছে আক্রমণ।
অভিযোগ, গত অক্টোবর মাসে বেজিংয়ের একটি স্কুলে ছুরি হাতে ঢুকে পড়ে ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। তার হামলায় রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়ে পড়ুয়ারা।
তারও আগে গত সেপ্টেম্বর মাসে সাংহাইয়ের একটি দোকানে এক আততায়ীর ছুরির আঘাতে মৃত্যু হয় তিনজনের।