উত্তর-মধ্য নাইজেরিয়ায় ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। গ্যাসোলিন ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন অন্তত ৮৬ জন। এছাড়াও বহু মানুষ আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে নাইজার রাজ্যের সুলেজা এলাকার কাছে। জানা গিয়েছে, একটি জেনারেটর ব্যবহার করে দুটি ট্যাঙ্কারের মধ্যে অবৈধ জ্বালানী স্থানান্তর করার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (এনইএমএ) জানিয়েছে, এই দুর্ঘটনা নিহতদের সিংহভাগই হলেন পথচারী।
জানা গিয়েছে একটি তেলের ট্যাঙ্কার দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছিল। তারপর লোকজন সেখান থেকে গ্যাসোলিন চুরি করার চেষ্টা করে কিছু লোকজন জেনারেটর ব্যবহার করে। সেই করতে গিয়েই অসাবধানতার জন্য ঘটে বিপত্তি। যারা গ্যাসোলিন ট্রান্সফার করছিল ও যেসব পথচারীরা তামাশা দেখছিলেন, তাদের অনেকেই লেলিহান অগ্নিস্ফুলিঙ্গে বলি হয়েছেন।জাতীয় আপৎকালীন ম্যানেজমেন্ট সংস্থার আধিকারিক হুসেইনি ইসাহ জানিয়েছেন যে আরও ৫৫জন আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসা চলছে। অনেকের শরীর পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে, তাই সুনির্দিষ্ট করে এই মুহূর্তে মৃতের সংখ্যা বলা সম্ভব নয়, বলেই তিনি জানান। প্রসঙ্গত, গ্যাসোলিনে সাবসিডি উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে নাইজেরিয়ায় বছর খানেক আগেই। তারপর থেকেই এরকম ভাবে লোকজন চুরি করতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: জয়পুরে এলপিজি ট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৩০জনকে বাঁচিয়ে রিয়েল হিরো ২০ বছরের তরুণ
উল্লেখ্য, এই ধরনের দুর্ঘটনা নাইজেরিয়ায় নতুন নয়। প্রায়ই এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে থাকে দেশটিতে। এছাড়াও সড়ক দুর্ঘটনাও দেশটিতে প্রায়ই ঘটে থাকে। গত সেপ্টেম্বরে একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছিল নাইজার রাজ্যে। গবাদি পশু বহনকারী একটি ট্রাকের সঙ্গে একটি পেট্রোল ট্যাঙ্কারের ধাক্কা লেগেছিল। তাতে কমপক্ষে ৪৮ জন নিহত হয়েছিলেন।
নাইজেরিয়ার ফেডারেল রোড সেফটি কর্পসের তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র ২০২০ সালে দেশে ১,৫৩১টি পেট্রোল ট্যাঙ্কার দুর্ঘটনা ঘটেছিল। যার ফলে ৫৩৫ জন মারা যান এবং ১,১০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছিলেন। এই ধরনের ঘটনা থেকে প্রাণহানি এড়াতে কর্তৃপক্ষ সতর্কতা ও নিরাপত্তা বিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সাল থেকেই দেশটিতে জ্বালানি ভর্তুকি বাতিল করেছিলেন রাষ্ট্রপতি বোলা টিনুবু। এছাড়াও, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং অন্যান্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হয়। তারপরেই তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়। এই অবস্থায় দেশে গত ১৮ মাসে গ্যাসোলিনের দাম পাঁচগুণ বেড়েছে। যার ফলে অনেকে ট্যাঙ্কার ট্রাক দুর্ঘটনার সময় জ্বালানি পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নেন। এটি আফ্রিকার সবচেয়ে এই জনবহুল দেশে সাধারণ। এদিনের দুর্ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন নাইজার রাজ্যের গভর্নর উমারু বাগো। একটি বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, এই বিস্ফোরণ ‘উদ্বেগজনক, হৃদয়বিদারক এবং দুর্ভাগ্যজনক।’ তিনি বলেন, প্রচুর সংখ্যক মানুষ বিস্ফোরণের আগুনে পুড়ে দগ্ধ হয়ে গিয়েছেন। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে, উত্তর নাইজেরিয়ার জিগাওয়া রাজ্যে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। সেই ভয়ঙ্কর ঘটনায় ১৭০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলেন।