ভূস্বর্গে কি কোনও ভয়ঙ্কর রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটল? এই প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে। কারণ, সেখানকার রাজৌরি জেলায় একের পর এক অঘটন ঘটতে শুরু করেছে। সূত্রের দাবি, এই জেলায় এখনও পর্যন্ত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু, কী কারণে মৃত্যু, সেটা স্পষ্ট নয়। তাই বলা হচ্ছে, অজানা অসুস্থতা থেকেই নাকি মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে।
বুধবার এই অসুস্থতার প্রকোপেই এক নাবালকের মৃত্যু হয়েছে। তার জেরে মৃতের সংখ্য়া বেড়ে হয়েছে আট। একের পর এই ধরনের মৃত্যুর খবর সামনে আসায় নড়চড়ে বসেছে প্রশাসনও। তাদের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কেন্দ্রীয় দল গঠন করা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, স্থানীয় গ্রামগুলিতে যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যরা সেগুলির তদন্তে সহযাগিতা করবেন।
শুধু তাই নয়। এই অসুখ আসলে কী এবং কেন মানুষ এতে আক্রান্ত হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে বায়োসেফটি লেভেল - ৩ (বিএসএল - ৩) মানের একটি ভ্রাম্যমান গবেষণাগারও সেখানে পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আধিকারিকরা সংবাদমাধ্যমকে একথা জানিয়েছেন।
তাঁরা জানিয়েছেন, অজানা এই অসুখে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গিয়েছে মাত্র ১২ বছরের এক বালকের। তার নাম আশফাক আহমেদ। তাঁর বাবা মহম্মদ রফিক জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। যে কারণে তাকে ছ'দিন জম্মুর সরকারি মেডিক্য়াল কলেজে ভর্তি রাখা হয়। কিন্তু, তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ওই বালককে এর আগে চণ্ডীগড়ে রেফার করা হয়েছিল। কিন্তু, তাকে বাঁচানো যায়নি। এর থেকেও শোচনীয় বিষয় হল, আশফাক একা নয়। একইভাবে প্রাণ গিয়েছে তার দুই ছোট্ট ভাইবোনেরও! তারা হল - ৭ বছরের ইশতিয়াক এবং ৫ বছরের নাজিয়া। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার তাদের মৃত্যু হয়।
আপাতত কেবলমাত্র কোটরাঙ্কা তহসিলের বাধাল গ্রামেই এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছে। সব মিলিয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই পরিবারের আটজন সদস্যের।
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবারই ওই গ্রামে যান রাজৌরির ডেপুটি কমিশনার অভিষেক শর্মা। তখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল সাত। যার মধ্য়ে ছ'জনেরই বয়স ১৪ বছরের নীচে! তারা সকলেই একে একে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এবং তারপর মারা যায়।
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাঁরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন এবং মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখছেন। এর জন্য বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। আর যাতে কাউকে এভাবে প্রাণ দিতে না হয় এবং অজানা এই অসুখ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেই বিষয়ে সচেতন রয়েছে প্রশাসন।