ফের রক্তপাত পাকিস্তানে। এবার সেদেশে হামলা চালাল বন্দুকবাজের দল। প্রাণ গেল সাতজন শ্রমিকের। যদিও, কারা সেই ঘাতক, এখনও পর্যন্ত তা জানা যায়নি।
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্দুকবাজদের হামলার এই ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশের পঞ্জগুর শহরে। আততায়ীর গুলিতে নিহত সাতজন শ্রমিক আদতে পড়শি রাষ্ট্রের পঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন।
পুলিশের হাতে আসা প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, হামলাকারীরা স্থানীয় একটি বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে। সেই বাড়িতেই আক্রান্ত শ্রমিকরা থাকতেন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের দাবি, এই ঘটনায় হামলাকারীরা স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে।
পঞ্জগুরের সিনিয়র সুপারিনটেন্ডেন্ট অফ পুলিশ সইদ ফাজিল শাহ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এই ঘটনায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে এবং এক শ্রমিক গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন। তবে, তাঁরা যে হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে পারেননি, সেটাও জানিয়েছেন ওই পুলিশ কর্তা।
প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন ধরেই পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশে রক্তপাত চলছে। এর আগে অগস্ট মাসেও একাধিক জায়গায় হামলা চালিয়েছে আততায়ীরা।
স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, হামলাকারীরা সকলেই বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। তারা মূলত, বিভিন্ন থানা, রেললাইন, প্রধান সড়কপথ এবং সেনাবাহিনীর রসদ সরবরাহকারী আস্তানাগুলি নিশানা করছে।
এই ধরনের লাগাতার হামলার ফলে এখনও পর্যন্ত ৭০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে। নিহতদের মধ্যে পঞ্জাব প্রদেশের বহু বাসিন্দা রয়েছেন। এঁরা মূলত ব্যক্তিগত কাজে অথবা কর্মসূত্রে বালোচিস্তানে এসেছিলেন।
এমন ঘটনাও ঘটেছে, যেখানে পঞ্জাব থেকে আসা নাগরিকদের বাস মাঝরাস্তায় থামিয়ে, যাত্রীদের জোর করে বাস থেকে নামিয়ে খুন করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) নামে একটি জঙ্গি সংগঠন এই সমস্ত হামলার দায় স্বীকার করেছে। বিচ্ছিন্নতাবাদী এই সংগঠন দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে তাদের জিহাদ চালিয়ে যাচ্ছে।
বিএলএ-র বক্তব্য হল, বালোচিস্তান অঞ্চলটিতে যে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ পদার্থের ভাণ্ডার রয়েছে, সেগুলির বিলিবণ্টনের ক্ষেত্রে খোদ বালোচের বাসিন্দাদের সঙ্গেই কেন্দ্রের সরকার বঞ্চনা করছে। তারই প্রতিবাদে তাদের এই রক্তক্ষয়ী জিহাদ! বালোচের মানুষকে তারা নাকি চরম দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিতে চায়।
বিএলএ জঙ্গিদের দাবি, চিনের স্বার্থ রক্ষার করার জন্য বালোচের সম্পদ ব্যবহার করা যাবে না এবং এই অঞ্চলকে সম্পূর্ণ স্বাধীন প্রদেশ হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। তাদের এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিএলএ তাদের জিহাদ চালিয়ে যাবে বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছে।