তিনি মারা গেলে যেন তাঁর লেখা একটি চিঠি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এমনই আর্জি ছিল মাফিয়া থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা আতিক আহমেদের। এই অবস্থায় আতিকের আইনজীবী বিজয় মিশ্র জানালেন যে তাঁর মক্কেলের লেখা সেই চিঠি যোগী এবং প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়ে গিয়েছে। তবে সেই চিঠি নাকি তাঁর কাছে ছিল না। অন্য কেউ সেই চিঠি পাঠিয়েছে। এমনকী সেই চিঠি চিরকাল সিল করা ছিল বলেও জানান তিনি। চিঠির বিষয়বস্তু কারও জানা নেই বলে দাবি করেছেন আইনজীবী বিজয় মিশ্র। অবশ্য, এর একদিন আগেই আইনজীবী বিজয় মিশ্র দাবি করেছিলেন যে আতিকের ভাই আশরাফ নাকি তাঁর কাছে দাবি করেছিলেন, সেই চিঠিতে এক পুলিশ আধিকারিকের নাম রয়েছে যিনি দাবি করেছিলেন যে পুলিশি হেফাজতেই আতিক ও আশরাফের মৃত্যু হবে।
বিজয় মিশ্র গতকাল বলেন, 'প্রয়াগরাজ থেকে বরেলি যাওয়ার পথে একজন পুলিশ আধিকারিক আশরাফকে বলেছিলেন যে এই যাত্রায় বেঁচে গেলেও ১৫ দিনের মধ্যে তাঁদের বাইরে বের করে এনে খুন করা হবে। আমি আশরাফের থেকে সেই পুলিশ আধিকারিকের নাম জানতে চেয়েছিলাম। তবে তিনি মনে করেছিলেন, সেই পুলিশকর্মীর নাম জানলে আমার বিপদ হতে পারে, তাই তিনি তাঁর নাম আমাকে বলেননি।'
উল্লেখ্য, একদিন আগেই আতিকের ছেলে আসাদ আহমেদের মৃত্যু হয়েছিল এক এনকাউন্টারে। ছেলের শেষযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য আতিক আবেদন জানালেও তাঁকে ছাড়া হয়নি। এই আবহে শনিবার রাত ১০টা নাগাদ আতিককে প্রয়াগরাজের এক সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য। সেখানেই গাড়ি থেকে নামার পর আতিককে ঘিরে ধরেছিলেন সাংবাদিকরা। তাঁর ছেলের শেষযাত্রা না যেতে পারা নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছিল আতিককে। প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও কয়েক পা যাওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে শুরু করেছিলেন আতিক। কিছু কথা বলার পরই আচমকা আতিকের বাঁদিক থেকে একটি বন্দুকধারী এসে মাথায় 'পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে' গুলি করে তাঁকে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, আতিককে গুলি করে খুন করার ঘটনায় ধৃতদের নাম হল লাভলেশ তিওয়ারি, অরুণ মৌর্য এবং সানি সিং। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আতিক ও আশরাফকে গুলি করার পর সানি, লাভলেশরা 'জয় শ্রী রাম' স্লোগান তুলেছিল। এদিকে আতিক ও আশরাফকে খুনের পরই সানি, অরুণ এবং লাভলেশকে ধরে ফেলে পুলিশ। তাদের জেরা করা হলেও এখনও আতিক ও আশরাফ হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে মুখ খোলেনি পুলিশ।