বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > বিমান ভাড়া ২৮ লাখ টাকা! পোষ্য কুকুরকে ঘরে ফেরাতে সবকিছু করতে রাজি দম্পতি

বিমান ভাড়া ২৮ লাখ টাকা! পোষ্য কুকুরকে ঘরে ফেরাতে সবকিছু করতে রাজি দম্পতি

বিমান ভাড়া ২৮ লাখ টাকা! পোষ্য কুকুরকে ঘরে ফেরাতে সবকিছু করতে রাজি দম্পতি (ছবিটি প্রতীকী, সের্গেই ম্যালগ্যাভকো/তাস/ডিপিএ/পিকচার অ্যালায়েন্স/ডয়চে ভেলে)

প্রাইভেট বিমানে করে আসবে পোষ্য।

করোনা সংকটের ফলে আটকে পড়া পোষা কুকুরকে ঘরে ফেরাতে প্রাইভেট বিমান ভাড়া করছেন এক অস্ট্রেলিয়ান দম্পতি৷

আসন্ন বড়দিনে পোষা কুকুরকে দূরে রাখতে চান না অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড হেনস ও তাঁর বাগদত্তা ট্যাশ করবিন৷ তাঁদের কুকুর - মাঞ্চকিন, বর্তমানে করোনা বিধির ফলে নিউজিল্যান্ডে আটকে আছে৷ প্রায় পাঁচ মাস ট্যাশের সঙ্গে দেখা হয়নি ডেভিড ও মাঞ্চকিনের৷

বড়দিন উপলক্ষে এই দূরত্ব ঘোচাতে ট্যাশ তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে নিউজিল্যান্ড থেকে প্রাইভেট বিমানে করে উড়িয়ে আনবেন ডেভিড ও মাঞ্চকিনকে৷ তাতে খরচ পড়বে ৪৫ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৮ লাখ টাকার সমান)৷ সংবাদসংস্থাকে তিনি বলেন, ‘টাকাটাই এখানে মূল নয়৷ বিষয় হচ্ছে কীভাবে ক্রিসমাসের আগে তাদের বাড়ি নিয়ে আসতে পারি, সেটাই৷ আমাদের জন্য বড়দিনে সবাই একসাথে থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ৷'

করোনা অতিমারির ফলে নিউজিল্যান্ডের সাথে অস্ট্রেলিয়ার সানশাইন কোস্ট অঞ্চলের বিমান যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিযেছে৷ যাওযার পথ বলতে খোলা রয়েছে নিউজিল্যান্ডের নর্থ আইল্যান্ড হয়ে সেখানে পৌঁছান৷ কিন্তু বর্তমানে সেখানে আছড়ে পড়েছে করোনা সংক্রমণের বড় ঢেউ৷ প্রাইভেট বিমান ভাড়া করার খরচ কিছুটা হলেও কম করতে বিমানের ভাড়া আরও অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান ডেভিড ও ট্যাশ৷ যদি আগ্রহী যাত্রী পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে অনেকটাই সহজ হবে মাঞ্চকিনের সঙ্গে অবশেষে জীবন শুরু করার প্রক্রিয়া৷

দীর্ঘ পথ পেরিয়ে এসেছে মাঞ্চকিন

মাঞ্চকিন আদতে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের বাসিন্দা ছিল, যেখান থেকে তাকে দত্তক নেন ডেভিড ও ট্যাশ৷ অস্ট্রেলিয়াতে প্রবেশ করতে হলে কোনও পোষ্য প্রাণীকে নানা ধরনের পরীক্ষা পাশ করতে হয়৷ এসব পরীক্ষা পাশ করতে মাঞ্চকিনের লেগে যায় তিন বছর, যা সে কাটায় সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন ফস্টার ফ্যামিলির সঙ্গে থেকে৷

২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডে প্রবেশ করার অনুমতি পায় মাঞ্চকিন ও তারপর ডেভিড ও ট্যাশ সেখানেই থাকতে শুরু করেন৷ তাঁদের আশা ছিল, ধীরে ধীরে মাঞ্চকিন অস্ট্রেলিয়ায় থাকার যোগ্য হলে তাঁরা ফিরে আসবেন৷ কিন্তু শারীরিক কারণে ট্যাশকে ফিরে আসতে হয় অস্ট্রেলিয়ায় ডেভিড ও মাঞ্চকিনকে ফেলে রেখেই৷ মাঞ্চকিনের সঙ্গে থাকতে চাওয়ার ইচ্ছা এতটাই খরচসাপেক্ষ হয়ে উঠেছে যে সোশাল মিডিয়ায় এই তিন জনের কাহিনি ছড়িয়ে পড়েছে 'মিলিয়ন ডলার মাঞ্চকিন' নামে৷

ট্যাশ বলেন, ‘কত টাকা খরচ হয়েছে, তা গোনা আমরা তিন বছর আগেই ছেড়ে দিয়েছি৷ আমরা শুরুর দিকে ভাবতেই পারিনি যে এত টাকা বা এত সময় লাগবে৷ আমরা ভেবেছিলাম কয়েক হাজার ডলার আর বড়জোর ছয় সপ্তাহ লাগবে৷' তবে ট্যাশ জানেন যে এতটা দীর্ঘ পথ আসার সামর্থ্য তার মতো সবার হয় না৷ ফলে এখন আর কোনওমতেই তিনি মাঞ্চকিনকে ফেলে আসবেন না৷ তাঁর মতে, ‘মাঞ্চকিন এখন আমার পরিবার৷ যা কিছু হয়ে যাক না কেন, আমি কিছু বদলাতে চাই না৷ আমি ওকে খুব ভালোবাসি, কারণ, সে সত্যিই দারুণ!'

বন্ধ করুন