প্রয়াত আল-কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের ছেলে ওমর বিন লাদেনকে অবিলম্বে ফ্রান্স ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার নির্দেশিকা জারি করেছে সেদেশের সরকার। মঙ্গলবার ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী একথা ঘোষণা করেছেন। তিনি জানান, সোশাল মিডিয়ায় করা একটি পুরোনো মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রয়াত জঙ্গি নেতার ছেলেকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৪৩ বছরের ওমর বিন লাদেনের জন্ম হয়েছিল সৌদি আরবে। তাঁর ছোটবেলা এবং প্রথম জীবন সেখানেই কাটে। পরবর্তীতে তিনি সুদান এবং সৌদি আরবেও বেশ কিছু দিন ছিলেন।
সূত্রের দাবি, মাত্র ১৯ বছর বয়সে বাবার সঙ্গ ত্যাগ করেন ওমর। তারপর থেকে উত্তর ফ্রান্সের নরম্য়ান্ডিতে থাকতে শুরু করেন তিনি। শুরু করেন ছবি আঁকা।
ফ্রান্সের নতুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ব্রুনো রেতাল্লিউ তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে দাবি করেছেন, এক ব্রিটিশ নাগরিকের স্বামী হিসাবে তিনি নরম্যান্ডির ওর্নে বিভাগে বসবাস করতেন।
ফরাসী মন্ত্রী আরও দাবি করেন, ওমর বিন লাদেন '২০২৩ সালে সমাজমাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের পক্ষ সমর্থন করে মন্তব্য করেছিলেন'। মন্ত্রী জানান, 'এরই ফলস্বরূপ, ওর্নের প্রশাসনিক আধিকারিক একটি নির্দেশিকা জারি করে (ওমর বিন লাদেনকে) ফরাসী ভূখণ্ড ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন।'
নিজের টুইটে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, আদালতও এই প্রশাসনিক সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে। আদালত জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ জরুরি ছিল।
এখানেই শেষ নয়। ভবিষ্যতেও যাতে আর কোনও কারণে ওমর ফরাসী ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে বা সেদেশে ফিরতে না পারেন, সেই ব্যবস্থাও পাকা করা হয়েছে। এর জন্য ফরসাী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী একটি নিষেধাজ্ঞাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন বলেও জানিয়েছেন।
তবে, এই ঘটনা সম্পর্কে এর বাইরে আর কোনও তথ্য ফরাসী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পক্ষ থেকে সামনে আনা হয়নি। ওমর বিন লাদেন ইতিমধ্যেই ফ্রান্স ছেড়ে চলে গিয়েছেন কিনা, তাও স্পষ্ট করা হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে ব্রিটিশ নাগরিক জেন ফেলিক্স-ব্রাউনিকে বিয়ে করেন ওমর। তাঁদের এই বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসে ২০০৭ সালে। সেই সময় এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে অনেক হইচই হয়েছিল।
কারণ, ওমরের থেকে তাঁর স্ত্রী বয়সে প্রায় ২০ বছরের বড়। এবং ওমরকে বিয়ে করার আগে তাঁর পাঁচবার ডিভোর্স হয়েছিল। শোনা যায়, এহেন জেনের নাতি, নাতনিও রয়েছে।
ওমরকে বিয়ের পর নিজের নাম পরিবর্তন করেন জেন। তাঁর নতুন নামকরণ হয়, জাইনা মহম্মদ। এরপর ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যে থাকার জন্য বহু চেষ্টা করেছিলেন ওমর বিন লাদেন। কিন্তু, ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেয়।
প্রসঙ্গত, ওসামা বিন লাদেন একজন ধনকুবেরের সন্তান ছিলেন বলেই দাবি করা হয়। তাঁর বাবা ছিলেন একজন নামজাদা সৌদি নির্মাণ ব্যবসায়ী। আরও দাবি করা হয়, ওসামা বিন লাদেনের যে একাধিক স্ত্রী ছিলেন, তাঁদের সকলের মিলিত সন্তান সংখ্যা অন্তত দু'ডজন! ওমর বিন লাদেন তাঁদের অন্যতম।