বাংলাদেশে নাকি আওয়ামি লিগকে ফেরাতে চাইছে সেনা। সম্প্রতি এক দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট করে এমনই দাবি করেছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। এই আবহে বাংলাদেশ ফের নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ঢাকায় প্রতিবাদ মিছিল নেমেছে আওয়ামি লিগের বিরুদ্ধে। আর এবার হাসনাতের সেই ফেসবুক পোস্ট নিয়ে মুখ খুললেন তাঁরই দলের মুখ্য সমন্বয়কারী নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারি। তাঁর কথায়, হাসনাতের সেই ফেসবুক পোস্টটি 'শিষ্টাচারবর্জিত'। সেই পোস্ট করা উচিত হয়নি তাঁর।
২২ মার্চ ঢাকায় এক ইফতারি পার্টিতে যোগ দিয়ে নাসিরউদ্দিন লেন, 'তাঁর (হাসনাত আবদুল্লাহ) এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা উচিত হয়নি। আমরা মনে করি, এটা শিষ্টাচারবর্জিত একটি স্ট্যাটাস। আমরা অবশ্য দেখেছি যে ক্যান্টনমেন্টের বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ রাজনৈতিক জায়গায় হস্তক্ষেপ করছেন। আমাদের কাছে এই ধরনের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। এই সিদ্ধান্তগুলো রাজনৈতিক নেতারাই নেবেন। সরকারি যে প্রতিষ্ঠানগুলোকে এতে না জড়ানোর জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।' তাঁর কথায়, 'ক্যান্টনমেন্ট হোক বা কোনও রাজনৈতিক দল, কেউ যদি আওয়ামি লিগকে রাজনীতিতে ফেরাতে চায় এবং কোনও অপচেষ্টা চালানো হয়, তাহলে ছাত্র-জনতা মাঠে নেমে আন্দোলন গড়ে তুলবে এবং সেই অপচেষ্টাকে রুখে দেবে।' তবে এখানেই প্রশ্ন উঠছে, আওয়ামি লিগ ইস্যুতে হাসনাতের সঙ্গে সহমত নাসিরউদ্দিন। তাহলে কেন তাঁর ফেসবুক পোস্ট নিয়ে তাঁর আপত্তি?
এদিকে ২২ মার্চ অন্য এক অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা সারজিস আলম বলেন, 'আমরা মনে করি অভ্যুত্থানের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সেনা যেমন বাংলাদেশের মানুষের পাশে ছিল, একই ভাবে আগামীতে তারা বাংলাদেশের মানুষের পাশে থাকবে।' আওয়ামি লিগকে ফেরানো নিয়ে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সেই বিষয়ে সারজিস বলেন, 'যে ঘটনাটি সামগ্রিকভাবে আমরা শুনতে পাচ্ছি, আমার মনে হয়, বিষয়টি এমন নয়। এখানে জনগণের সঙ্গে কিংবা জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে কিংবা রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই সরাসরি সেনাবাহিনীকে প্রতিপক্ষ করার কোনও সুযোগ নেই।'
প্রসঙ্গত, গত ২০ মার্চ হাসনাত এক ফেসবুক পোস্ট করে দাবি করেছিলেন, ক্যানটনমেন্টে নাকি সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্তার সঙ্গে সম্প্রতি নাকি বৈঠক করেছিলেন তাঁরা। তাতে নাকি তিনি 'ধমক' খেয়েছেন। ফেসবুকে নিজেই আবার সেই বৈঠকের বিবরণ দেন সেই এনসিপি নেতা। তাঁর কথায়, ক্যানটমেন্টে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে, সেটাকে তাঁরা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হিসেবে গণ্য করছেন। এহেন পরিস্থিতিতে হাসনাতের সেই বৈঠক সম্পর্কিত পোস্টকে সমর্থন করছে না তাঁরই দলের নেতা। সেনা এবং ছাত্র নেতাদের এই গোপন বৈঠক সামনে চলে আসায় কি তবে অস্বস্তি বা চাপে পড়েছে নাহিদ ইসলামের দল?