৫০০ বছরের লড়াইয়ের অবসান। অযোধ্যায় নিজের ঘরে ফিরেছেন শ্রীরামচন্দ্র। দেশ-বিদেশে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বাসে ভাসছেন হিন্দু ধর্মালম্বীরা। প্রায় ৮৫০০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে অযোধ্য শহরটিকে ঢেলে সাজানোর জন্, রামমন্দির নির্মাণের জন্য। আগামী দিনেও আরও অনেক টাকা খরচ হবে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার জন্য। তবে এই বিপুল কর্মযজ্ঞের ফলে যে পুণ্যার্থীদের ঢল নামবেন, তা বলাই যায়। এবার এক ব্রোকারেজ সংস্থা বলেছে যে বছরে আনুমানিক পাঁচ কোটি মানুষ রামমন্দির দেখতে আসবেন বলে তাদের অভিমত।
এই নতুন রিপোর্টে বলা হয়েছে যে অযোধ্যার এই ব্যাপক পুনর্গঠনের ফলে উত্তরপ্রদেশ সরকার ২৫,০০০ কোটি টাকারও বেশি কর রাজস্ব আয় করতে পারে। বর্তমানে দেশের মাত্র সাত শতাংশ জিডিপি আসে টুরিজম থেকে। কিন্তু পর্যটনে নয়া জোয়ার আসবে অযোধ্যার রামমন্দিরের হাত ধরে, এটি নিয়ে নিশ্চিত নীতি নির্ধারকরা। ব্রোকারেজ সংস্থা জেফারিজের অনুযায়ী, অযোধ্যায় গড়ে পাঁচ কোটি মানুষ আসতে পারেন। অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরে বছরে আনুমানিক ৩-৩.৫ কোটি মানুষ আসেন এবং তিরুপতি মন্দিরে আড়াই থেকে তিন কোটি দর্শনার্থী আসেন। ভ্যাটিকান সিটিতে প্রতি বছর প্রায় ৯০ লাখ পর্যটক এবং সৌদি আরবের মক্কায় প্রায় দুই কোটি পর্যটক আসেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে এদিন অযোধ্যায় রামমন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা হল। ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রের গণ্যমান্যরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে বিমানবন্দরের প্রথম পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন, যাতে দশ লাখ মানুষ যাতায়াত করতে পারেন বছরে। ২০২৫-এর মধ্যে কাজ শেষ হয়ে গেলে, ৬০ লাখ লোক ব্যবহার করতে পারবেন। অন্যদিকে রেলের যাত্রী পরিবহন ক্ষমতা দ্বিগুণ করে প্রতিদিন ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে।
বর্তমানে অযোধ্যায় ১৭টি ভালো হোটেল রয়েছে। কিন্তু পরিকল্পনা চলছে ৭৩টি নয়া হোটেলের যার মধ্যে ৪০টির কাজ শুরু হয়েছে। ইন্ডিয়ান হোটেলস, ম্যারিয়ট এবং উইন্ডহ্যাম ইতিমধ্যেই হোটেলগুলির জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, আইটিসিও শীঘ্রই আসবে শহরে। অযোধ্যায় এক হাজার হোটেল রুম তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে ওয়োর। মোটের উপর উত্তরপ্রদেশে পর্যটন খাতে আমআদমি চার লাখ কোটির ওপর বছরে খরচ করবেন বলে এসবিআই যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, সেটা সহজেই পূর্ণ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্বের পর্যটন ম্যাপে নবতম তারকা হয়ে উঠবে অযোধ্যার রামমন্দির, তা এককথায় বলাই বাহুল্য। এদিনের উন্মাদনা রেখে গেল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত।