নেকড়ে আতঙ্কে কার্যত ভয়ে কাঁটা উত্তর প্রদেশের বাহারইচ। এরই মাঝে নিজের সন্তানকে রক্ষায় এক মা রাতের অন্ধকারে লড়ে গেলেন নরখাদক নেকড়ের সঙ্গে। সন্তানের রক্ষায় এক মায়ের তাগিদ যে কোন স্তর পর্যন্ত যেতে পারে, বাহারইচের ঘটনা ফের তা তুলে ধরল। এই ঘটনা গুড়িয়া ও তাঁর সন্তান পারসের। শনিবারের রাতে ঠিক কী ঘটেছিল গুড়িয়াদের বাড়িতে?
আর চার পাঁচটা দিনের মতোই শনিবার রাতে বাড়ির উঠানে ঘুমোচ্ছিলেন গুড়িয়া। মায়ের কাছে নিশ্চিন্তে শুয়ে ছিল ৫ বছর বয়সী ছোট্ট পারস। অন্ধকার রাতে, তখন চারিদিক শুনশান। হঠাৎ গুড়িয়ার ঘুম ভাঙে একটি খুব নিচুস্বরের গোঙানির শব্দে। অন্ধকারের মধ্যে সবটা বুঝে উঠতে একটু সময় লাগে গুড়িয়ার। তবে যতক্ষণে তিনি সবটা বুঝে ফেলতে পেরেছেন, ততক্ষণে দেখেন ছেলে পারসের ঘাড়ে কামড় বসিয়ে তাকে টানছে নেকড়ে। গা দিয়ে বিদ্যুৎ খেলে যাওয়ার মতো দৃশ্যে, গুড়িয়া কোনও কিছু না বেবে ঝাঁপিয়ে পড়েন নেকড়ের উপর। হাত দিয়ে টিপে ধরেন নরখাদক নেকড়ের গলা। তখন দিকবিদিকে আর কিছু ভাবতে চাননি গুড়িয়া। ছেলেকে ভয়াবহ নেকড়ের মুখ থেকে রক্ষা করা তখন ‘মা' গুড়িয়ার কাছে একমাত্র লক্ষ্য। ধীরে ধীরে নেকড়ের গলা চেপে ধরে জোর বসাতে থাকেন গুড়িয়া। ততক্ষণে চিৎকার করতেও থাকেন তিনি। এসবের মাঝেই নেকড়ের মুখ থেকে ছাড়া পায় ৫ বছরের পারস। এরপর গুড়িয়ার হাত ছাড়িয়ে নেকড়ে পালিয়ে যায়। উধাও হয়ে যায় অন্ধকারে। ততক্ষণে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন এলাকাবাসীরা।
( Chandra Grahan 2024: ২০২৪র দ্বিতীয় চন্দ্রগ্রহণ রয়েছে সেপ্টেম্বর মাসে! কত তারিখে পড়ছে! রইল সময়কাল)
এই রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির পর, গুড়িয়া বলছেন, আবার যদি নেকড়ে হামলা করে, তাহলে তাকে মেরেই ফেলবেন তিনি। গুড়িয়া কুমার বলছেন,'কোনও দিক চিন্তা না করে চারাই থেকে লফিয়ে নেকড়ের দিকে ছুটে যাই। সন্তানকে বাঁচানোর মরিয়া প্রচেষ্টায়, বন্য প্রাণীটির উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম, আমার হাত তার গলায় শক্ত করে জড়িয়েছিলাম। আমি আমার সমস্ত শক্তি দিয়ে নেকড়েটিকে গলা টিপে মারার চেষ্টা করেছিলাম। মাটিতে পড়ে থাকা পারসের উপর তার খপ্পর ছেড়ে দিতে বাধ্য করেছিলাম।' ইতিমধ্যেই নেকড়ে আতঙ্কে কাঁটা বাহারইচ। ইতিমধ্যেই যোগী সরকার সেখানে অ্যাডভাইসারি জারি করেছে। নেকড়ে ধরার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারই মধ্যে এক মায়ের এই সাহসী পদক্ষেপ কাড়ছে নজর।