বাংলাদেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের মূর্তি ভেঙে খান খান। তাঁর স্মরণে তৈরি হওয়া মিউজিয়ামে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে জনতা। একেবারে অন্য বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি আঁকড়ে ধরে রাখত যে বাংলাদেশ সেই দেশে বঙ্গবন্ধুর মূর্তিতে উঠে প্রস্রাব করে দিলেন যুবকের দল।
তবে সীমান্তের ওপারে যখন এই ছবি তখন সীমান্তের এপারে কিন্তু একেবারে অন্যরকম ছবি। এখানে কলকাতার প্রাচীন একটি হস্টেলে আজও রক্ষিত আছে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি। ১১৪ বছরের পুরনো সেই হস্টেলে জড়িয়ে আছে শেখ মুজিবর রহমানের অনেক কথা।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার আর্কাইভ স্টোরি অনুসারে জানা গিয়েছে, মৌলানা আজাদ কলেজের বেকার হস্টেলর একটি রুমের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি। এখানে ১৯৪৫-৪৬ তিনি বাস করতেন। এখানেই তিনি কলেজের ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি হয়েছিলেন। এর এক বছর পরে কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় মুসলিমদের রক্ষা করতে তিনি কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছিলেন।
তৎকালীন ইসলামিয়া কলেজে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন ১৯৪২ সালে। পরে সেখান থেকেই তিনি বিএ পাশ করেন। আর রুম নম্বর ২৪ ছিল বঙ্গবন্ধুর যাবতীয় কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দু। স্বাধীন বাংলাদেশ তৈরির জন্য তখন থেকেই তিনি পরিকল্পনা করছিলেন। বাংলাদেশকে স্বাধীন করার যে আন্দোলন তাতে একেবারে সামনের সারিতে ছিলেন শেখ মুজিবর রহমান। আর তার জেরে গোটা বিশ্ব তাঁকে বঙ্গবন্ধু হিসাবে চেনে। এদিকে বাংলাদেশে সেই বঙ্গবন্ধুর মিউজিয়াম জ্বালিয়ে দেওয়া হলেও কলকাতায় তাঁর স্মৃতি আঁকড়ে এখনও আছে মিউজিয়াম। বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে একটি অনুরোধ পাওয়ার পরে ১৯৯৮ সালে রুম নম্বর ২৩ ও ২৪কে একটি মিউজিয়াম হিসাবে তৈরি করা হয়।
এদিকে দর্শনার্থীরা এই রুম দেখে আসতে পারেন। এখানে একটা ছোট্ট লাইব্রেরিও রয়েছে। সেখানে বঙ্গবন্ধ সম্পর্কিত বই রাখা আছে।
এদিকে ১৯৭০ সালের পরে তিনি তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য তিনি ভারতের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। বাংলাদেশের সেই মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পরে ১৯৭২ সালে তিনি কলকাতায় একবার এসেছিলেন। সেবার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জয়কে স্মরণ করে বিরাট সভা হয়েছিল।
এদিকে বাংলাদেশ সংক্রান্ত নানা কথা শেয়ার করা হচ্ছে সোশ্য়াল মিডিয়ায়। তা নিয়ে অবশ্য সতর্ক করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। পুলিশ সাফ জানিয়েছে,' প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু পোস্ট এবং ভিডিও আমাদের নজরে এসেছে যা বিভেদ এবং অশান্তি তৈরি করতে পারে। অনুরোধ, কোনওরকম গুজবে কান দেবেন না, উত্তেজক ভিডিও শেয়ার করবেন না।' পাশাপাশি বলা হয়,' রাজ্য প্রশাসন সতর্ক এবং সজাগ রয়েছে। শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন।'