ঢাকার স্টেডিয়াম থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে দিল মহম্মদ ইউনুসের সরকার। পূর্ব পাকিস্তানের আমলে যে স্টেডিয়াম তৈরি হয়েছিল, গত তিন দশক ধরে সেটার নাম ছিল ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম’। তবে সেই নাম পালটে দেওয়া হয়েছে। শনিবার বাংলাদেশের জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মহম্মদ আমিনুলের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, স্টেডিয়ামের নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ‘জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকা’। কেন সেই নাম পালটানো হয়েছে, সেটা জানানো না হলেও কারণটা নিয়ে কারও কোনও ধন্দ থাকার কথা নেই বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
আগেও পালটানো হয়েছিল সেই স্টেডিয়ামের নাম
তবে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম’-র নাম আগেও পালটানো হয়েছে। যে স্টেডিয়াম ১৯৫৪ সালে তৈরি হয়েছিল। সেইসময় বাংলাদেশের জন্ম হয়নি। দেশটার নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত সামলে ১৯৯৮ সালে আওয়ামি লিগের আমলে সেই স্টেডিয়ামের নামের সঙ্গে ‘বঙ্গবন্ধু’ যুক্ত করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন সেটি ঢাকা স্টেডিয়াম হিসেবে পরিচিত থাকলেও আওয়ামি লিগের শাসনকালে সেই নাম পালটে হয়েছিল ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম’।
বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট খেলেছিল ওই স্টেডিয়ামেই
আর সেই ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম’-র সঙ্গে অনেক ইতিহাস জড়িত আছে।একটা সময় ফুটবলের পাশাপাশি ওই স্টেডিয়ামে ক্রিকেটও খেলা হত। ২০০০ সালের নভেম্বরে যখন প্রথম টেস্ট ক্রিকেট খেলেছিল বাংলাদেশ, তখন ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম’-এ খেলা হয়েছিল। নয় উইকেটে জিতেছিল ভারত। প্রথমে ব্যাট করে ৪০০ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৪২৯ রান করেছিল ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৯১ রানে অল-আউট হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ৬৩ রান তাড়া করতে নেমে সহজেই জিতে গিয়েছিল ভারত।
সেই ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামের নাম পালটে ফেলেছে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গত বছরের ৫ অগস্ট বাংলাদেশে আওয়ামি লিগ তথা শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে একাধিক স্টেডিয়ামের পালটে দিয়েছেন ইউনুসরা। দিনকয়েক আগেই উপজেলা স্তরে ১৫০টি স্টেডিয়ামের নাম পালটে দেওয়া হয়। আর এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম’।
বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে তাণ্ডব, খোলা হয়েছে ম্যুরাল
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবি, হাসিনা পরিবারের কারও নামে বাংলাদেশের কোনও স্থাপত্য বা স্টেডিয়াম নামকরণ না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে বাংলাদেশের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িতে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বাড়ি) ভাঙচুর চালানো হয়। তাণ্ডব চালানো হয় হাসিনার বাড়িতে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে। যেখানে বঙ্গবন্ধুর নাম লেখা ছিল, তা খুলে ফেলে তাণ্ডব চালানো হয়েছে বাংলাদেশে।