কোটা সংস্কার নিয়ে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন শুরু হতেই পুলিশের উপর একের পরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর পুলিশ প্রশাসনের ওপর হামলা আরও বহুগুণে বেড়ে যায়। পুলিশকে মারধর থেকে শুরু করে থানা, পুলিশের গাড়িতে আগুন, ভাঙচুরের বহু ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘটনায়। ঘটনায় একাধিক পুলিশ কর্মী নিহত হয়েছেন। কার্যত নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত পুলিশ কর্মীরা। ফলে অনেকেই থানায় যেতে ভয় পাচ্ছেন। এই অবস্থায় বাংলাদেশ পুলিশের জরুরি হেল্পলাইন যেমন মুখ থুবড়ে পড়েছে তেমনিই পুলিশের অভাবে বন্ধ হয়ে রয়েছে একাধিক থানা। বৃহস্পতিবার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ নতুন অন্তবর্তী সরকার গঠন হওয়ার পরেই পুনরায় দেশে শান্তি ফেরাতে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। এমন অবস্থায় বন্ধ হয়ে যাওয়া থানাগুলি দ্রুত চালু করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘আমাদের শত্রুকে সাহায্য করলে....’ হাসিনা ইস্যুতে ভারতকে সতর্ক করল BNP
জানা গিয়েছে, পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে রাজধানী ঢাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় বন্ধ থানা পুনরায় চালু করার কথা বলা হয়েছে। ঢাকা পুলিশের নতুন কমিশনার মহম্মদ মইনুল হাসান দ্রুত পুলিশ কর্মীদের থানায় যোগ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। অন্তত দ্রুত থানার চেয়ার, টেবিল সারিয়ে মানুষকে যাতে পরিষেবা দেওয়া সে বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার কমিশনার অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে পুলিশের উপর হামলার বিষয়টি উঠে আসে। বাংলাদেশের এক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, অনেক থানা রয়েছে যেখানে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। থানায় বসে কাজ করার মতো অবস্থা নেই। থানার কম্পিউটার থেকে শুরু করে যানবাহন, চেয়ার, টেবিল সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় কোন কোন থানাগুলি এরকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক আগেই সব পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কর্মস্থলে যোগদান করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু, ২৪ ঘণ্টা হলেও ঢাকা শহর ও দেশের অন্যান্য একাধিক থানায় পুলিশ কর্মীদের দেখা যায়নি বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
পাশাপাশি পুলিশ কর্মীরা যাতে কর্মস্থলে যোগ দিতে পারেন তার জন্য রাজনৈতিক দল এবং পড়ুয়াদের তাদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছে পুলিশের সদর দফতর। তারপরেই দেখা যায় কিছু পড়ুয়া একাধিক থানার দেওয়ালে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর এবং লুটপাট থেকে বিরত থাকার জন্য আবেদন জানিয়ে পোস্টার সাটিয়ে দেন। এর পাশাপাশি বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র এবং অন্যান্য সরঞ্জাম পুলিশের কার্যালয়ে ফেরত দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।