বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পরেই কুখ্যাত ‘আয়নাঘর’ থেকে মুক্তি পেয়েছেন একের পর এক বন্দি। দীর্ঘদিন ধরে যারা নিখোঁজ ছিলেন তারাও একে একে করে ফিরেছেন। তার পরেও বহু মানুষের খোঁজ পাওয়া যায়নি। আপাতভাবে আয়নাঘর শব্দটি কোনও রূপকথার ঘর বলে মনে হলেও হাসিনা জমানায় এখানেই প্রতিবাদীদের গুম করে নিয়ে এসে অত্যাচার চালানো হতো সেই আয়নাঘরেই রাখা হয়েছিল বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের উপদেষ্টা তথা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মুখ নাহিদ ইসলামকে। এমনটাই দাবি করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: 'বাংলাদেশি হিন্দুদের নিয়ে ভারতের বলার দরকার নেই', বললেন ইউনুস সরকারের উপদেষ্টা
বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে একটি সভার আয়োজন করা হয়। সেই সভায় যোগ দিয়েছিলেন নাহিদ ইসলাম। সেখানে যোগ দিয়ে তিনি জানান, ২৪ ঘণ্টা ধরে তাঁকে আয়নাঘরে রাখা হয়েছিল। সেই সময় আয়নাঘরে থাকার অভিজ্ঞতার কথা জানান তিনি। তাছাড়া সেখানে বন্দিদের কী দশা দেখেছিলেন বা আয়না ঘরের ভিতরের পরিবেশ কেমন ছিল সে বিষয়েও নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানান। বন্দিরা আয় আয়নাঘরের দেওয়ালে অনেক কিছু লিখে রাখতেন বলে জানান নাহিদ। তিনি দাবি করেন, আয়নাঘরে ভয়ঙ্করভাবে নির্যাতন চালানো হতো এবং সেই অত্যাচার এতটাই ভয়াবহ ছিল যে সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার পরেও অনেকে সেই কথা বলতে চাননি। এমনকী কেউ তা ভাবতেও চান না। নাহিদ জানান, তাঁকে আয়নাঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ২৪ ঘণ্টা ধরে তাঁকে সেখানে রাখা হয়েছিল। যদিও কবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বা কী কারণে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সে বিষয়ে কিছুই জানাননি তিনি।
তাঁর দাবি, সেখানে যারা গিয়েছিলেন তারা অনেকেই ঘরের দেওয়ালে অনেক কিছুই লিখেছিলেন। সেগুলি তিনি দেখেছেন। নাহিদ জানান, কতজনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, আয়নাঘর সম্পর্কে প্রথম তথ্য সামনে আসে ২০২২ সালে। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে তা নিয়ে লেখালেখি করা হয়। তারপরে বিভিন্ন সময়ে আয়নাঘর নিয়ে বিভিন্ন তথ্য সামনে আসে। অভিযোগ, শেখ হাসিনা স্বৈরাচারী ছিলেন। তিনি ক্ষমতায় থাকাকালীন কোনও বিরোধিতা সহ্য করতে পারতেন না। তাই কেউ তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই তাদের তুলে নিয়ে গিয়ে আয়নাঘরে রেখে দেওয়া হতো। আসলে এটি আলো বাতাসহীন একটি জেলখানা, কার্যত অন্ধকার কুটুরির মতো। এখানকার বন্দিদের কোনওরকমের বিচার হতো না । দিনের পর দিন নির্যাতন করা হতো বন্দিদের।