বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৫ জন অফিসারকে মানবতাবিরোধী ৩টি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বাংলাদেশ সেনার সদর দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যে ১৬ জন সেনা অফিসারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ১৫ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে একজনের এখনও হদিশ মিলছে না বলে দাবি করেছে বাংলাদেশের সেনা। আপাতত এই ১৫ জনকে সেনা নিজেদের হেফাজতেই নিয়েছে। আর এরই মধ্যে এবার জানা গেল, এই সেনা কর্মকর্তাদের বিচার শেষ হওয়া পর্যন্ত নিজেদের হেফাজতেই রাখতে চায় বাহিনী। জানানো হয়েছে, মামলার নির্দিষ্ট তারিখে সেনাবাহিনী এই অফিসারদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করবে। তারপর আদালতের কার্যক্রম শেষে আবার হেফাজতে নিয়ে যাবে। প্রসঙ্গত, সামরিক আদালতে এই ১৫ জন সেনা আধিকারিকের বিচার হবে না। এই আবহে ধৃত অফিসারদের সেনাবাহিনী নিজেদের হেফাজতে রাখতে চাইলে তা হবে নজিরবিহীন। এই সব ক্ষেত্রে পুলিশের জেলে ঠাঁই হয়ে থাকে অভিযুক্তদের।
উল্লেখ্য, বর্তমান ও প্রাক্তন মিলিয়ে ২৫ জন অফিসারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয় গত ৮ অক্টোবর। বাংলাদেশ সেনার অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মহম্মদ হাকিমুজ্জামান জানান, বর্তমানে সেনার আধিকারিক থাকা ১৬ জনের বিরুদ্ধে তারা পদক্ষেপ করতে যায়। তাতে দেখা যায়, ১ জন নিখোঁজ। বাকি ১৫ জনকে তারা নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। এদিকে যে গ্রেফতারি পরোয়ানার ভিত্তিতে বাংলাদেশি সেনা অফিসারদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, সেটার কপি এখনও হাতে আসেনি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেনার অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল। এদিকে অবসরপ্রাপ্ত যে ৯ সেনা কর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বলে জানানো হয়েছে বাহিনীর তরফ থেকে।
এদিকে ধৃত অফিসারদের সেনা হেফাজতে রাখা নিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। ইউনুস সরকারের পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। এই আবহে আইন অনুযায়ী, গ্রেফতারির পরে অভিযুক্তদের আদালতে পেশ করতে হয়। তারপর আদালত সিদ্ধান্ত নেবে যে তাদের কারাগারে পাঠাবে, তদন্তকারীদের হেফাজতে পাঠাবে নাকি জামিন দেবে। এর সঙ্গে অবশ্য তিনি এও যোগ করেন, প্রয়োজনে সরকার যেকোনও স্থাপনাকে কারাগার হিসেবে গণ্য করতে পারে। এদিকে আইন মন্ত্রকের সূত্র থেকেও নাকি বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমকে 'সাবজেল' ঘোষণার নজিরের কথা বলা হয়েছে। এর আগে ২০০৭-০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকাকালীন হাসিনা এবং খালেদাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং সেই সময় সরকার সংসদ ভবনের কাছে দুটি বাড়িকে সাবজেল ঘোষণা করে সেখানে দুই নেত্রীকে রেখেছিল। তবে সেই ক্ষেত্রে অভিযুক্তরা সিভিলিয়ান ছিলেন। আর এখানে অভিযুক্তরা সামরিক অফিসার। এবং তাদের নিজদের হেফাজতে রাখতে চাইছে বাহিনী।