বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের প্রায় পাঁচমাস পর হঠাৎই বেশ সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে সেদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে। এর আগে বাংলাদেশের প্রথম সারির সংবাদপত্র 'প্রথম আলো'-কে তিনি এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার দেন। যার একটা অংশ জুড়ে ছিল ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক। আর এবার সেই তিনিই সাক্ষাৎ করলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি নেত্রী বেগম খালেজা জিয়ার সঙ্গে।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে যে খবর সামনে এসেছে, সেই অনুসারে - বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি, ২০২৫) স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে আটটা নাগাদ খালেদার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জেনারেল জামান। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী!
বিএনপি-র মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবীর খানকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই খবর সম্প্রচার করা হয়েছে। শায়রুলকে উদ্ধৃত করেই সেইসব প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এদিন রাতে খালেদা জিয়ার গুলশন এলাকার বাসভবন ফিরোজায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জেনারেল জামান ও তাঁর স্ত্রী। তাঁদের এই সাক্ষাৎকে সৌজন্যমূলক বলে বিএনপি-র তরফে দাবি করা হয়।
বলা হচ্ছে, খালেদার বাসভবনে সস্ত্রীক সেনাপ্রধানকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেত্রীর নিরপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফজলে ইলাহি আকবর। তিনিই জেনারেল জামান ও তাঁর সহধর্মিণীকে খালেদার কাছে নিয়ে যান।
শায়রুলের দাবি, প্রায় ৪০ মিনিট তাঁরা কথা বলেন। এবং সেনাপ্রধান ও তাঁর স্ত্রীর এই আগমনের একমাত্র কারণ হল - অসুস্থ খালেদা জিয়াকে দেখতে আসা এবং তাঁর শরীর স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া! সেনাপ্রধান ও তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়ার দ্রুত ও সম্পূর্ণ সুস্থতাও কামনা করেছেন বলে জানিয়েছেন শায়রুল।
এদিকে, ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপি-র প্রকাশ্য দড়ি টানাটানি শুরু হয়ে গিয়েছে। দ্রুত ভোট করানো নিয়ে কার্যত পরস্পরের বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে বিএনপি এবং ইউনুস প্রশাসন। একইসঙ্গে, ইউনুস প্রশাসনের অন্যতম ভরসা জামায়াতের সঙ্গেও বিএনপি-র সংঘাত বাঁধল বলে! কারণ, বিএনপি এরই মধ্য়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের অবদান কী?
এই যখন দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তখনই সেনাপ্রধান জানিয়ে দিয়েছন, তিনি অন্তত যত দিন দায়িত্বে থাকবেন, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখবেন। আবার সেই সেনাপ্রধানই বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। এবং বাংলাদেশ ভারতের কৌশল-পরিপন্থী কোনও পদক্ষেপ করতে চায় না।
এই আবহে বিএনপি সুপ্রিমো খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধানের 'সৌজন্য সাক্ষাৎ' আদতে কোন 'ক্রোনোলজি'র অংশ, সেটাই বোঝার চেষ্টা করছে সংশ্লিষ্ট মহল।