বাংলাদেশ জুড়ে সেনাবাহিনী নিয়ে চলছে জল্পনা। আর এরই মাঝে ২৩ মার্চ সন্ধ্যায় এক ইফতারি পার্টি থেকে জুলাই আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বড় বার্তা দিলেন বাংলাদেশি সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ঢাকায় সেনামালঞ্চে জুলাই আহতদের সম্মানে ইফতারির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, 'সেনাবাহিনী সব সময় জুলাই আন্দোলনে আহতদের পাশে থাকবে।' সেনা প্রধান জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ৪২০০ জন জুলাই আহতকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে।
ইফতারের অনুষ্ঠানে ওয়াকার বলেন, 'জুলাই আন্দোলনের আহতদের আর্থিক সহায়তা দিতে কাজ করছে সেনাবাহিনী। আপনারা জাতির কৃতি সন্তান। আমরা আপনাদের পাশে আছি সব সময়। আপনারা মনোবল হারাবেন না। নিশ্চয়তা দিচ্ছি, সেনাবাহিনী আহতদের পাশে থাকবে। তাদের পুনর্বাসনে সহযোগিতা করা হবে।' সেনা প্রধান জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ৪২০০ জন জুলাই আহতকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। এদিকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারী হাসনাত আবদুল্লাহর সম্প্রতি সেনা বিরোধী মন্তব্যের ঝড় তুলেছেন। এর মাঝে আহত জুলাই আন্দোলনকারীদের জন্যে সেনার ইফতারি অনুষ্ঠান বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে হাসনাত দাবি করেছিলেন, তাঁদের নাকি ডেকে নিয়ে গিয়ে সেনা সদর দফতরে ধমকানো হয়েছিল। আওয়ামি লিগকে ফেরাতে নাকি সেনা 'ষড়যন্ত্র'করছে। এমনকী সেনা কর্তারা ভারতের হয়ে কাজ করছেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন হাসনাত। তবে হাসনাতের এই সব দাবি উড়িয়ে দিয়েছে সেনা। কার্যত হাসনাতকে পাত্তাই দেয়নি ক্যান্টনমেন্ট। অপরদিকে হাসনাত আবদুল্লাহর সহকর্মী সারজিস আলম আজ এক দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে হাসনাতের সঙ্গে 'দ্বিমত' পোষণ করেন।
উল্লেখ্য, হাসনাত দাবি করেছিলেন, সেনা প্রধান 'রিফাইন্ড আওয়ামি লিগ' আনার জন্যে তাঁদের ওপর চাপ দেন। তবে সারজিস দাবি করেন, তাঁদের কোনও চাপ দেওয়া হয়নি, সেনা প্রধান নিজের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু কথা বলেছিলেন। এদিকে হাসনাত দাবি করেছিলেন, সেনা প্রধান নাকি কড়া ভাষায় ইংরেজিতে বেশ কিছু কথা শুনিয়েছিলেন তাঁদের। সেই বিষয়ে সারজিস আবার দাবি করেছেন, সোজাসাপ্টা ভাবে কথাগুলো বলা হলেও তাতে ধমকের সুর ছিল না। এই সবের মাঝে আবার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের একটি ভিডিয়ো ক্লিপ পোস্ট করেছিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তাতে আসিফকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ইউনুসে আপত্তি ছিল ওয়াকারের। এর থেকে ধারণা করা হচ্ছিল, হাসনাত সরাসরি সেনার সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে সেনা প্রধান ওয়াকার-উজ-জামানকে গদিচ্যুত করতে চাইছেন। এদিকে সারজিস আবার জানিয়ে দিয়েছেন, সেনা প্রধানকে সরানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এহেন পরিস্থিতিতে ঢাকার রাজনীতিক উত্তাপ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এবং সেনা এই আবহে কী করে, বা আদৌ কিছু করে কি না, সেদিকে নজর থাকবে সবার।