বাংলাদেশি সেনা প্রধানের সঙ্গে গত ১১ মার্চের বৈঠকে কী ঘটেছিল? এই নিয়ে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ এবং সারজিস আলমের মধ্যে দেখা গিয়েছে 'দ্বিমত'। এহেন পরিস্থিতিতে ফেসবুকে দুই নেতার পোস্টে অস্বস্তি বেড়েছে নাহিদ ইসলামের নবগঠিত দলের অন্দরেই। এই আবহে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইলেন এনসিপি শীর্ষস্থানীয় নেতা নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারি। এর আগে সারজিসের বহুল চর্চিত সেই ফেসবুক পোস্টে গিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ কমেন্ট করেছিলেন, 'এসব কী ভাই। দু'জনের একজন তো মিথ্যা বলছেন।' এদিকে খালেদ সাইফুল্লা নামে এক এনসিপি নেতা লেখেন, 'ব্যক্তিগত রাজনীতি হাসিলের জন্য তাঁরা যখন যা ইচ্ছা বলে বেড়াচ্ছেন। যদি কন্ট্রোভার্সি আর পপুলিজম দিয়েই রাজনীতি করতে চান, তাহলে আমাদের পার্টি থেকে বাদ দিয়ে টিকটকারদের এনে বসিয়ে দিন।' (আরও পড়ুন: নয়াদিল্লি স্টেশনে 'প্রচণ্ড ভিড়', কুম্ভকালে পদপিষ্টের দুঃস্বপ্নে ঘুম ভাঙল রেলের)
আরও পড়ুন: কাঠুয়ায় এনকাউন্টারে জখম নাবালিকা, পুঞ্চে বড়সড় হামলার ছক বানচাল করল সেনা
এই সব বিতর্কের মাঝে ২৩ মার্চ সন্ধ্যায় এনসিপির মুখ্য সমন্বয়কারী নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারি বলেন, 'এনসিপি নেতাদের মধ্যে কোনও দূরত্ব কিংবা বোঝাপড়ার জায়গায় কোনও ঘাটতি নেই। তবে একটি বড় অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। আন্দোলন ও রাজনৈতিক জায়গা - এই দু'টো আলাদা। সেই জায়গা থেকে এই গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্ররা নিজেদের রাজনৈতিক জায়গায় রূপান্তর করছেন। সেখান থেকে যদি কোনো ভুলত্রুটি হয়ে থাকে, দেশবাসীকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করছি। ফেসবুকে যেসব মন্তব্য পড়েছে, সেগুলো মূল্যায়ন করে আমরা দেখেছি, আমাদের ওপর মানুষের প্রত্যাশা অনেক উঁচু। সে ক্ষেত্র থেকে তারা আমাদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আমরা সেই পরামর্শ নিই।' (আরও পড়ুন: পরকীয়ার সন্দেহে স্ত্রীকে গুলি, ৩ সন্তানকে খুন, গ্রেফতার উত্তরপ্রদেশের BJP কর্মী)
আরও পড়ুন: বংলাদেশ আছে বাংলাদেশেই, ষষ্ঠ শ্রেণির ত্রিপুরা কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুন হোস্টেলে
উল্লেখ্য, সম্প্রতি হাসনাত আবদুল্লাহ সেনার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক সব দাবি করেন। বিভিন্ন জনসভায় উস্কানিমূলক মন্তব্য করার আগে ফেসবুকে বোমা ফাটিয়েছিলেন এই নেতা। সেখানে হাসনাত নিজের পোস্টে পালটা দাবি করেছিলেন, সেনা প্রধান 'রিফাইন্ড আওয়ামি লিগ' আনার জন্যে তাঁদের ওপর চাপ দেন। তবে সারজিস দাবি করেন, তাঁদের কোনও চাপ দেওয়া হয়নি, সেনা প্রধান নিজের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু কথা বলেছিলেন। এদিকে হাসনাত দাবি করেছিলেন, সেনা প্রধান নাকি কড়া ভাষায় ইংরেজিতে বেশ কিছু কথা শুনিয়েছিলেন তাঁদের। সেই বিষয়ে সারজিস আবার দাবি করেছেন, সোজাসাপ্টা ভাবে কথাগুলো বলা হলেও তাতে ধমকের সুর ছিল না। এই সবের মাঝে আবার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের একটি ভিডিয়ো ক্লিপ পোস্ট করেছিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তাতে আসিফকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ইউনুসে আপত্তি ছিল ওয়াকারের। এর থেকে ধারণা করা হচ্ছিল, হাসনাত সরাসরি সেনার সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে সেনা প্রধান ওয়াকার-উজ-জামানকে গদিচ্যুত করতে চাইছেন। এদিকে সারজিস আবার জানিয়ে দিয়েছেন, সেনা প্রধানকে সরানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এহেন পরিস্থিতিতে ঢাকার রাজনীতিক উত্তাপ ক্রমেই বেড়ে চলেছে।