ভয়ানক দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকল বাংলাদেশ। নৌকাডুবির ঘটনা ঘটল মহালয়ার দিন। এদিন বাংলাদেশের পঞ্চগড়ে করতোয়া নদীতেই এই নৌকাডুবির ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অন্তত ৫১ জনের প্রাণ গিয়েছে। তাঁদের সকলের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনও অনেকের কোনও খোঁজ মিলছে না। আশঙ্কা করা হচ্ছে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। নিখোঁজদের উদ্দেশ্যে খোঁজ চলছে। তবে মৃত ব্যক্তিদের নাম বা পরিচয় কোনওটাই এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের আউলিয়া ঘাটের কাছে রবিবার দিন এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনাস্থল থেকেই ১৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় এবং সাতজনকে স্থানীয় বোদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু তাঁরা সকলে মৃত বলে পরে জানা যায়। রাজিউর রহমান রাজু, বোদা উপজেলার স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানান যে তাঁদের হাসপাতালে সাতজনের দেহ রয়েছে। পরে আরও মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া বাকি ১৭ জনের দেহ ঘটনাস্থলেই রাখা হয়েছে বলে জানান পঞ্চগড়ের জেলাশাসক জহুরুল ইসলাম। মহালয়া উপলক্ষে এদিন দুপুরে বোদা, পাঁচপীর, মাড়েয়া, ব্যাঙহারি প্রভৃতি জায়গার হিন্দুরা মিলে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে বদেশ্বরী মন্দির যাচ্ছিলেন বলে জানান স্থানীয় ব্যক্তি এবং উদ্ধার হওয়া যাত্রীরা। তবে সেই নৌকোয় অতিরিক্ত যাত্রী ছিল বলে জানা যায়। তাই মাঝনদীতে যেতে না যেতেই অতিরিক্ত যাত্রীর ভারে নৌকাটি আচমকা দুলতে শুরু করে, মাঝি ঘাটে ভেড়ানোর চেষ্টা করেন নৌকাটিকে। কিন্তু সেটা সম্ভব হয় না। তার আগেই, দুপুর দেড়টা নাগাদ নৌকাটি একপাশে হেলে গিয়ে উল্টে যায়। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ৮ জন শিশু সহ ১২ জন মহিলা এবং ৪ জন পুরুষ যাত্রী। সেদিন নৌকোয় প্রায় ৭০-৮০ জন যাত্রী ছিলেন বলেই জানা যায়।
এই ঘটনা আকস্মিক ভাবে ঘটায়, অনেকেই ভয় পেয়ে যান। কিছু মানুষ কোনও মতে সাঁতরে পাড়ে আসতে পারলেও অধিকাংশই এখনও নিখোঁজ। এখনও উদ্ধারকাজ চলছে। সুজয় কুমার রায়, বোদা থানার ওসি জানান তৎপরতার সঙ্গেই উদ্ধারকাজ চলছে, কিন্তু এখনও প্রায় ৩০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ এবং দমকলবাহিনী একত্রে এই উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
দুর্ঘটনায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের সকলের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য করা হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।