বাংলাদেশে চলছে অমর একুশে বইমেলা। আর এই বইমেলায় একটি স্টলে বিক্রি হচ্ছিল ডায়েপার এবং স্যানিটারি ন্যাপকিন। তার জেরে স্টলটি বন্ধ করে দিল মেলা পরিচালন কমিটি। এই নির্দেশকে কেন্দ্র করে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তবে মেলা কমিটি জানিয়েছে, স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ডায়েপার বিক্রি মূল বিষয় নয়। আসলে ওই স্টলের অনুমোদন না থাকায় তা সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যদিও বিতর্কের মুখে পড়ে কমিটি পরে জানিয়েছে, ন্যাপকিন বিতরণ অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বইমেলার স্টলে হামলা,'জিহাদিরা পর্ন দেখে', তোপ তসলিমার, ইউনুসের সরকার বলল…
রবিবার দেখা যায় বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে অবস্থিত ওই স্টলটি বন্ধ ছিল। স্টলটি কালো কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। এ নিয়ে সোশ্যাল মাধ্যমে শোরগোল পড়ে যায়। কেউ কেউ দাবি করেছেন যে ইসলামিক গোষ্ঠীর জনতার ভয়ে স্টলটি বন্ধ করেছে মেলা কমিটি। বন্ধ সংক্রান্ত নির্দেশের চিঠিও সোশ্যাল মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাতে লেখা হয় বেশ কিছু ইসলামিক গোষ্ঠী স্টলে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রিতে আপত্তি জানাচ্ছিল। তবে বইমেলা কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, এই চিঠি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা থেকে দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, কোম্পানির ব্যবসায়িক স্বার্থের কথা বিবেচনা করে রেখে দুটি স্টলে অন্য পণ্য বিক্রি করা হচ্ছিল। বইমেলার আয়োজক কমিটি বাংলা একাডেমির পরিচালক মহম্মদ আজম জানিয়েছেন, পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পেরে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী বইমেলায় বই এবং খাবার ছাড়া অন্য কোনও পণ্য বিক্রি করা যাবে না। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ডায়েপার বা স্যানিটারি ন্যাপকিন কোনও বিষয় নয়। তবে অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও স্টলটি সেখানে কীভাবে এল তাই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এ বিষয়ে আজম জানিয়েছেন, বইমেলায় একাধিক কাজের জন্য কিছু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা টয়লেট থেকে শুরু করে মেলার বেশ কিছু অবকাঠামোর কাজ করে থাকে। এর জন্য তারা স্পন্সর সংগ্রহের অনুমোদন পায়। যার মধ্যে রয়েছে শৌচাগার পরিষ্কারের কাজ। কিন্তু, স্টলটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা কমিটিকে না জানিয়ে তৈরি করেছিল। এদিকে, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থাও অনুমোদন ছাড়া স্টল তৈরির কথা স্বীকার করেছে।
পরে বিতর্ক শুরু হতেই বাংলা একাডেমি রবিবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে দুঃখ প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বইমেলায় স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়েপার বিক্রি সংক্রান্ত একটা ইস্যু বহু মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাই ন্যাপকিন ও ডায়েপার বিতরণ অব্যাহত থাকবে।