বাংলাদেশের আপত্তিতে অসমে সাময়িকভাবে মন্দিরের নির্মাণকাজ থমকে গেল। অসমের শ্রীভূমি (অতীতের করিমগঞ্জ) জেলায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে একটি মন্দিরের পুননির্মাণ করা হচ্ছিল। সেইসময় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী 'বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ'-র (বিজিবি) তরফে একটি ছাউনি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। তার জেরে সাময়িকভাবে মন্দিরের নির্মাণকাজ থমকে যায়। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, পুরো বিষয়টি নিয়ে নেহাতই একটা ধন্দ তৈরি হয়েছিল। আলোচনার মাধ্যমে সেটা মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন আর কোনওরকম জটিলতা নেই বলে শ্রীভূমি জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
ছাউনি নিয়েই যাবতীয় ধন্দ, দাবি জেলা প্রশাসনের
শ্রীভূমি জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর মনসা মন্দিরের পুনর্নিমাণের কাজ চলছিল। সেই কাজের জন্য শ্রমিকরা একটি ছাউনি তৈরি করেছিলেন। আর সেই কালো রঙের প্লাস্টিকের ছাউনি নিয়ে যাবতীয় ধন্দ তৈরি হয়েছিল। বিজিবির নজরে পড়েছিল সেই ছাউনি। বিজিবির আপত্তিতে সাময়িকভাবে মন্দিরের পুনর্নিমাণের কাজ থমকে ছিল। সেই পরিস্থিতিতে সন্ধ্যায় ফ্ল্যাগ মিটিং' হয়। তারপরই সব জটিলতা কেটে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন শ্রীভূমি জেলা প্রশাসনের ওই শীর্ষকর্তা।
এমনিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ৯৫ কিলোমিটারের সীমান্ত আছে শ্রীভূমির। একটা বড় অংশে নদীপথে বিভক্ত হয়েছে দু'দেশ। তারইমধ্যে খবর চাউর হয়ে গিয়েছিল যে বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে ভারতের দিকে চলে আসে বাংলাদেশের সিলেট ডিভিশনের বিজিবির একটি দল। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে চিঠি লিখে মন্দিরের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়।
ভারতের ভূখণ্ডে ঢোকেনি বিজিবি, বলল বিএসএফ
বিএসএফের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বিষয়টি একেবারেই নতুন কিছু নয়। দু'দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীই একে অপরের সঙ্গে কথা বলে থাকে। তাঁর কথায়, 'এখানে সীমান্ত হল নদীই। অর্ধেক অংশে থাকে বিজিবি। অর্ধেক অংশে থাকি আমরা। কখনও অস্বাভাবিক কিছু দেখলে আমরা একে অপরের থেকে খোঁজখবর নিই। গতকাল (বৃহস্পতিবার) ওরা ভারতের অংশে (মন্দির) নির্মাণ নিয়ে কথা বলতে চেয়েছিল। আলোচনার মাধ্যমে আমরা যাবতীয় ধন্দ কাটিয়ে ফেলেছি।'
তিনি জানিয়েছেন, কুশিয়ারা নদীর মাঝামাঝি অংশে যান বিএসএফের আধিকারিকরা। সেখানেই 'ফ্ল্যাগ মিটিং' হয়। সেইসঙ্গে তিনি বলেছেন, 'বিজিবি ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েছে বলাটা ঠিক হবে না। ওরা যদি কিছু জানতে চায়, তাহলে ১৫০ মিটার পর্যন্ত আসতে পারে। আমরাও কখনও কখনও ওদিকে যাই এবং ওরাও সহযোগিতা করে থাকে।'
আধা-আধা খবর ছড়ানো হচ্ছিল, দাবি পুলিশের
একইসুরে শ্রীভূমির পুলিশ সুপার পার্থপ্রতিম দাস জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি নিয়ে আধা-আধা খবর ছড়ানো হচ্ছিল। দু'দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে এরকম আলোচনা হামেশাই হয়। এটা একেবােই স্বাভাবিক ঘটনা। কেউ-কেউ আধা তথ্য ছড়াচ্ছিলেন। এখন সবকিছু ঠিক আছে।