তিস্তার জল বন্টন নিয়ে এবার আন্তর্জাতিক মঞ্চের দ্বারস্থ হতে পারে বাংলাদেশ। এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশের নতুন অন্তবর্তী সরকারের জল, অরণ্য, পরিবেশ এবং জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। একইসঙ্গে তিস্তার জল নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃঢ় অবস্থানের কথা উল্লেখ করে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। রিজওয়ানা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার নদী সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে জোরদার পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
আরও পড়ুন: তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চিনকে টেক্কা দিয়ে দিল ভারত? বাংলাদেশে ফিরে কী বললেন হাসিনা
রিজওয়ানা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘তিস্তার জলে বাংলাদেশের অধিকার আদায়ের দিক থেকে আমরা পিছপা হব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যে তিনি নিজের মানুষকে বঞ্চিত করে আমাদের জল দেবেন না। তাই আমরা তিস্তার তীরে বসবাসকারী আমাদের মানুষদের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে তুলে ধরব।’
বাংলাদেশের পক্ষে তিনি ঘোষণা করেন, বাংলাদেশের নতুন সরকার তিস্তাসহ দুদেশের মধ্যে অন্যান্য নদীর জল বন্টন নিয়ে নয়াদিল্লির সঙ্গে আলোচনা করবে। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিস্তার জল নিয়ে যৌথ নদী কমিশন অনেক দরকষাকষি করছে। তবে এবার আমরা তিস্তার তীরে বসবাসকারী মানুষদের বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জল পাব কি পাব না তা আমাদের হাতে নেই। তবে আমরা এই বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে কথা বলতে চাই। তাতে আমরা আমাদের অবস্থান ভারতকে খুব স্পষ্টভাবে জানাব। প্রসঙ্গত, কুশিয়ারা এবং ফেনীর মতো নদীর জল ভাগ নিয়েও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি রয়েছে। তিনি জানান, ঢাকা ও নয়াদিল্লিকে ১৯৯৬ সালের গঙ্গার জল বন্টন চুক্তির পুনর্নবীকরণের জন্য আলোচনা করতে হবে। প্রসঙ্গত, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়াদেই এই চুক্তি সমাপ্ত হয়েছিল। তবে তিস্তা আলোচনায় অবশ্য কোনও অগ্রগতি হয়নি। সম্প্রতি তিনি ভারতের সঙ্গে এনিয়ে কথাও বলেছিলেন। তবে তার আগেই শেখ হাসিনার সরকার পড়ে যায়।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জোর দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ তার দাবি তুলে ধরতে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মঞ্চে যেতে পারে। আলোচনায় তিস্তার তীরে বসবাসকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।নদীর জল ভাগ নিয়ে রিজওয়ানা বলেন, ‘আমরা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখব। তবে আমরা আমাদের দাবিগুলির ওপরে জোর দেব। এমনকী আমাদের ন্যায্য দাবির বিষয়ে কথা বলার জন্য আন্তর্জাতিক মঞ্চেও কাছে যেতে পারি। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ চিনসহ একাধিক দেশ থেকে জল সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছে। তবে যেখানে দরকার হবে বাংলাদেশ সেখানেই কথা বলবে বলে তিনি স্পষ্ট করেছেন।