টানা হিংসা, ভাঙচুরের ঘটনায় 'নীরব দর্শক' থাকার পর গতকাল গভীর রাতে ফের মুখ খুলল মহম্মদ ইউনুসের সরকার। বলা হয়েছে, সারা দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের চেষ্টা শক্তভাবে প্রতিহত করা হবে। রাতে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করে লেখা হয়েছে, 'অন্তর্বর্তী সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে কতিপয় ব্যক্তি ও গোষ্ঠী সারা দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করছে। সরকার এ ধরনের কর্মকাণ্ড শক্তভাবে প্রতিহত করবে। অন্তর্বর্তী সরকার নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রস্তুত। কোনও ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হলে দায়ী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেবে এবং দোষীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাবে।' (আরও পড়ুন: ধানমন্ডির 'আগুন' ছড়িয়েছে আরও ৩৫ জায়গায়, বাংলাদেশ কি ইউনুসের নিয়ন্ত্রণের বাইরে?)
আরও পড়ুন: অশান্ত বাংলাদেশে কি হাসিনাকে ফেরত পাঠাবে ভারত? সংসদে জবাব দিল মোদী সরকার
এর আগে মুজিবের বাড়ি ভাঙার ঘটনা নিয়ে একটি পোস্ট করা হয়েছিল প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে। তাতে দাবি করা হয়েছে, হাসিনা যে বারবার 'মিথ্যা ও মনগড়া' মন্তব্য করেছেন, তাতে বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশের ভাবাবেগে আঘাত করছে। ইউনুসের সরকারের বক্তব্য, গত বছরের অগস্টে হাসিনার পতনের পর থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িতে কোনওরকম বিপত্তি ঘটেনি। চালানো হয়নি হামলা। কিন্তু বুধবার রাতে হাসিনা যে ‘হিংসাত্মক আচরণ’ করেছেন, তারই প্রতিক্রিয়া হিসেবে মুজিবর রহমানের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। (আরও পড়ুন: আমেরিকা ও মিত্রদের 'নিশানার জের', আন্তর্জাতিক আদালতের ওপর নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্পের)
সেই পোস্টে লেখা হয়, 'জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা আত্মদান করেছেন শেখ হাসিনা তাদেরকে অপমান করেছেন, অবমাননা করেছেন। শহিদের মৃত্যু সম্পর্কিত অবান্তর, আজগুবি ও বিদ্বেষমূলক কথা বলে পলাতক শেখ হাসিনা জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে অবজ্ঞা করেছেন ও অশ্রদ্ধা জানিয়েছেন। শেখ হাসিনা দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও অমানবিক প্রক্রিয়ায় নিপীড়ন চালিয়ে ক্ষমতায় থাকাকালীন যে সুরে কথা বলতেন, গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়ার পরেও তিনি একই হুমকি-ধামকির সুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে, গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া প্রতিটি মানুষের বিরুদ্ধে কথা বলে চলেছেন। হুমকি, ধামকি দিচ্ছেন। শেখ হাসিনা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির হুমকি দিয়েছেন। মানুষের মনে জুলাই গণহত্যা নিয়ে যে ক্ষত রয়েছে, সে ক্ষততে শেখ হাসিনা একের পর এক আঘাত করে চলছেন। তার এই সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশ ও জনগণের জানমালের রক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বাত্মকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার যথাযথ চেষ্টা করছে।'