মানুষের যাতে ন্যায়বিচার পেতে দেরি না হয়, তা নিশ্চিত করার বার্তা দিলেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ‘বিচারিক স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ সম্মেলনে এমন একটা সময় তিনি সেই কথা বলেছেন, যখন হিন্দু সন্ন্যাসী তথা সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণদাসের গ্রেফতারি নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। অভিযোগ উঠেছে যে হুমকির মুখে গত মঙ্গলবার তাঁর হয়ে আদালতে কোনও আইনজীবী সওয়াল করতে আসেননি। যদিও চিন্ময় প্রভুর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সেই মন্তব্য করেননি। বরং নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে সেই মন্তব্য করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাঁর কাছে এক ব্যক্তি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। বিচার পেতে কত দেরি হচ্ছে, সেটা জানিয়েছিলেন। সব শুনে তাঁকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে পরের মাসেই সেই মামলা শোনা হবে। আর তা শুনে ওই ব্যক্তি যেভাবে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন, তা তাঁর মনে দাগ কেটে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি। তাঁর মতে, ন্যায়বিচার পেতে সাধারণ মানুষকে যাতে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
ইউনুস আসার পরে প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথগ্রহণ সৈয়দের
এমনিতে মাসচারেক আগে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথগ্রহণ করেছেন সৈয়দ। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি ওবাদুয়েল হাসান। তারপর প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথগ্রহণ করেন সৈয়দ। অর্থাৎ বাংলাদেশে মহম্মদ ইউনুস যুগ সূচনার সময় থেকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গত ৮ অগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথগ্রহণ করেন ইউনুস। তারপর প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথগ্রহণ করেন সৈয়দ।
আর তিনি বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় গতি আনতে চান বলে দাবি করেছেন। তবে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তিনি বিশেষ কিছু বলেননি বলে একাধিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে। তারইমধ্যে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছন, 'এই মুহূর্তে আমরা এক ধ্বংসস্তূপের উপরে দাঁড়িয়ে আছি। অতীতে বিচারপ্রক্রিয়ায় আমাদের বিচারবোধ এবং ন্যায়বিচারের মূল্যবোধ বিনষ্ট করা হয়েছে। সততার বদলে শঠতা, অধিকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনা, বিচারের বদলে নিপীড়ন, আশ্রয়ের বদলে নির্যাতনকে স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত করা হয়েছে।'
‘এরকম সমাজ-রাষ্ট্র আমরা চাইনি, বললেন প্রধান বিচারপতি
তিনি আরও দাবি করেন, ‘এরকম সমাজ-রাষ্ট্র আমরা চাইনি। এই ধ্বংসস্তূপের উপরে দাঁড়িয়ে আমাদের নতুন করে যাত্রা শুরু করতে হবে।’ সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, বিচারব্যবস্থাও নয়া যাত্রায় সামিল হয়েছে। ছাত্র-জনতা আন্দোলনের হাত ধরে নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ এসেছে।